পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলাতকা

বিনু আপন বাক্স খুলে
টাকা শিকে যা হাতে পায় তুলে
কাগজ দিয়ে মুড়ে
দেয় সে ছুঁড়ে ছুঁড়ে।
সবার দুঃখ দূর না হলে পরে
আনন্দ তার আপনারই ভার বইবে কেমন ক’রে!
সংসারের ঐ ভাঙা ঘাটের কিনার হতে
আজ আমাদের ভাসান যেন চিরপ্রেমের স্রোতে—
তাই যেন আজ দানে ধ্যানে
ভরতে হবে সে যাত্রাটি বিশ্বের কল্যাণে।
বিনুর মনে জাগছে বারে-বার,
নিখিলে আজ একলা শুধু আমিই কেবল তার;
কেউ কোথা নেই আর
শ্বশুর ভাসুর সামনে পিছে ডাইনে বাঁয়ে—
সেই কথাটা মনে ক’রে পুলক দিল গায়ে।

বিলাসপুরের ইস্টেশনে বদল হবে গাড়ি;
তাড়াতাড়ি
নামতে হ’ল; ছ ঘণ্টা কাল থামতে হবে যাত্রীশালায়।
মনে হল, এ এক বিষম বালাই।
বিনু বললে, ‘কেন, এই তো বেশ।’
তার মনে আজ নেই যে খুশির শেষ।

২২