পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পলাতকা

আস্তে চলে, আস্তে বলে, সবার চেয়ে জায়গা জোড়ে কম,
সবার চেয়ে বেশি পরিশ্রম।

কিন্তু যে তার কানাই বলাই নেহাত ছোট্ট ছেলে—
তাদের তরে রেখেছিলেন মেলে
বিধাতা যে প্রকাণ্ড এই ধরা;
অঙ্গে তাদের দুরন্ত প্রাণ, কণ্ঠ তাদের কলরবে ভরা।
শিশুচিত্ত-উৎস-ধারা বন্ধ করে দিতে
বিষম ব্যথা বাজে মায়ের চিতে।
কাতর চোখে করুণ সুরে মা বলে ‘চুপ চুপ’
একটু যদি চঞ্চলতা দেখায় কোনোরূপ।
ক্ষুধা পেলে কান্না তাদেব অসভ্যতা;
তাদের মুখে মানায় নাকো চেঁচিয়ে কথা;
খুশি হলে রাখবে চাপি,
কোনোমতেই করবে নাকো লাফালাফি!
অপূর্ব আর পূর্ণ ছিল এদের একবয়সি;
তাদের সঙ্গে খেলতে গেলে এরা হত পদে পদেই দোষী।
তারা এদের মারত ধড়াধ্বড়,
এরা যদি উল্টে দিত চড়
থাকত নাকো গণ্ডগোলের সীমা—
উভয় পক্ষেরই মা
কানাই বলাই দোঁহার ’পরে পড়ত ঝড়ের মতো,

৩০