পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভোলা

হঠাৎ আমার হল মনে
শিবের জটার গঙ্গা যেন শুকিয়ে গেল অকারণে—
থামল তাহার হাস্য-উছল বাণী,
থামল তাহার নৃত্যনূপুর-ঝর্‌ঝরানি,
সূর্য-আলোর সঙ্গে তাহার ফেনার কোলাকুলি,
হাওয়ার সঙ্গে ঢেউয়ের দোলাদুলি
স্তব্ধ হল এক নিমেষে,
বিজু যখন চলে গেল মরণপারের দেশে
বাপের বাহুর বাঁধন কেটে।
মনে হল, আমার ঘরের সকাল যেন মরেছে বুক ফেটে।
ভোরবেলা তার বিষম গণ্ডগোলে
ঘুম-ভাঙনের সাগর-মাঝে আর কি তুফান তোলে!
ছুটোছুটির উপদ্রবে
ব্যস্ত হত সবে,
হাঁ-হাঁ করে ছুটে আসত ‘আরে আরে করিস কী তুই’ ব’লে;
ভূমিকম্পে গৃহস্থালি উঠত যেন টলে।
আজ যত তার দস্যুপনা, যা-কিছু হাঁক ডাক,
চাক-ভরা মৌমাছির মতো উড়ে গেছে শূন্য করে চাক।
আমার এ সংসারে

৬১