পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলাতকা

কী ভেবে যে হাত বাড়ালো জানি না কোন্‌ ভুলে।
অমনি পাগল নিল তারে কাঁধের ’পরে তুলে,
ভোলানাথের জটায় যেন ধুৎরোফুলের কুঁড়ি;
সে অব্‌ধি তার ঘরের কোণটি জুড়ি
সুর্মি আছে ঐ পাগলের পাগলামির এক স্বচ্ছ শীতল ধারা
হিমালয়ে নির্ঝরিণীর পারা।
এখন তাহার বয়স হবে দশ,
খেতে শুতে অষ্টপ্রহর মহেশ তারই বশ।
আছে পাগল ঐ মেয়েটির খেলার পুতুল হয়ে
যত্নসেবার অত্যাচারটা সয়ে।
সন্ধ্যাবেলায় পাড়ার থেকে ফিরে
যেমনি মহেশ ঘরের মধ্যে ঢোকে ধীরে ধীরে,
পথ-হারানো মেয়ের বুকে আজও যেন জাগায় ব্যাকুলতা—
বুকের ’পরে ঝাঁপিয়ে প’ড়ে গলা ধ’রে আবোল-তাবোল কথা।

এই আদরের প্রথম বানের টান
হলে অবসান
ওদের বাসায় আমি যেতেম রাতে।
সামান্য কোন্‌ কথা হত এই পাগলের সাথে।
নাইকো পুঁথি, নাইকো ছবি, নাই কোনো আসবাব;
চিরকালের মানুষ যিনি ঐ ঘরে তাঁর ছিল আবির্ভাব।
তারার মতো আপন আলো নিয়ে বুকের তলে

৮৪