[ b : রাজনগরেশ্বর মহারাজ রাজবল্লভের কথায় বিষের মিশ্রণ আছে, তড়িৎ-বেগ নাই ; কথা যেন ফুট ফুটে হইয়াও দুঃখভরে কণ্ঠলগ্ন হইয়া থাকে। কিন্তু ঐ যে অস্ফুট কথা; তাছাতেও—
- * * * উঠিল কঁাপিয়া দুর দুরু করি মিরজাফবের হিয়া ।”
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রকৃত ধাৰ্ম্মিক, প্রাপদ্বেষী, পবিত্র ও পরদুঃখকাতর। তিনি যখন আলিবর্দির অকলঙ্ক চিত্রপটের দিকে দৃষ্টপাত করিয়৷ সিরাজের কলঙ্ক-পঙ্কিল কুংসিত প্রতিমূৰ্ত্তি নিরীক্ষণ করেন, তখন তৃণায় র্তাহার আত্মা জর্জরিত হয়। কিন্তু তিনি জগৎশেঠের মত সাহসী নহেন, রাজবল্লভের মত কূটভাষীও নহেন। . তাহার পরামর্শ স্পষ্ট কথা । চক্রীদিগের মধ্যে র্তাহারই চক্রান্ত নাই, কারণ তিনি মীমাংসাকারী। আমরা প্রস্তাব-বহুল্য-ভয়ে বাণী ভবানীর কথা হইতে পাঠকের জন্ত কিছুই উদ্ধৃত করিতে না পারিয়া নিতান্ত দুঃখিত রহিলাম। কিন্তু ইহা বলিতে পারি যে, যিনিই সেই অমৃতাভিষিক্ত বিষ কি বিষাক্ত অমৃত পান কবিবেন, তিনিই পদে পদে কবিবর নবীনচন্দ্রকে হৃদয় খুলিয়া সাধুবাদ দিবেন। যদি কোন ব্যক্তি সুগভীর নিদ্রার মধ্যে সহসা কোন অশ্রুতপূর্ব অদ্ভুত শব্দ শ্রবণ করিয়া জাগিয়া বসেন, তাহ হইলে তাহার চিত্ত যেরূপ নানাবিধ অচিন্তনীয় ভাবে তৎকালে আলোড়িত হয়, এই কাব্যের প্রথম সর্গ হইতে দ্বিতীয় সর্গে অবতীর্ণ হওয়া মাত্র পাঠকের অসাবধান চিন্তুও সহসা সেইরূপ আলোড়িত হইয় উঠে । প্রথম সর্গের সমস্ত কথাই নিশার দুঃস্বপ্নের মত অলীক বোধ হয় ;