রমা বলিল,—“শুধু নামে। বাবা নিশ্চয় জান্তেন, সমস্ত বিষয় যতীনই পাবে; তাই অর্দ্ধেক আমার নামে দিয়ে গেছেন।” তথাপি রমেশ মিনতির কণ্ঠে কহিল,—“রমা, এ ক’টা টাকা? তোমাদের অবস্থা এদিকের সকলের চেয়ে ভাল। তোমার কাছে এ ক্ষতি ক্ষতিই নয়, আমি মিনতি জানাচ্চি, রমা, এর জন্যে এত লোকের অন্নকষ্ট ক’রে দিয়ো না। যথার্থ বল্চি, তুমি যে এত নিষ্ঠুর হ’তে পার, আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।”
রমা তেমনি মৃদুভাবেই জবাব দিল,—“নিজের ক্ষতি কর্তে পারিনে ব’লে যদি নিষ্ঠুর হই, না হয় তাই। ভাল, আপনার যদি এতই দয়া, নিজেরই না হয় ক্ষতিপূরণ ক’রে দিন না।” তাহার মৃদু কণ্ঠস্বরে বিদ্রূপ কল্পনা করিয়া রমেশ জ্বলিয়া উঠিল। কহিল,—“রমা, মানুষ খাঁটি কি না, চেনা যায় শুধু টাকার সম্পর্কে। এই জায়গাটায় না কি ফাঁকি চলে না, তাই, এইখানেই মানুষের যথার্থ রূপ প্রকাশ পেয়ে উঠে। তোমারও আজ তাই পেলে, কিন্তু, তোমাকে আমি কখনো এমন ক’রে ভাবিনি। চিরকাল ভেবেচি, তুমি এর চেয়ে অনেক—অনেক উঁচুতে; কিন্তু, তুমি তা’ নও। তোমাকে নিষ্ঠুর বলাও ভুল। তুমি অতি নীচ—অতি ছোটো।” অসহ্য বিস্ময়ে রমা দুই চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিল,—“কি আমি?”
রমেশ কহিল,—“তুমি অত্যন্ত হীন এবং নীচ। আমি যে কত ব্যাকুল হ’য়ে উঠেছি, সে তুমি টের পেয়েচ ব’লেই আমার কাছে ক্ষতিপূরণের দাবী কর্লে! কিন্তু, বড়দাও