আক্বর, থানায় চল্। সাত বচ্ছর যদি না তাকে দিতে পারি, ত ঘোষালবংশের ছেলে নই আমি।” পিছনে চাহিয়া কহিল,—“রমা, তুমি একবার বল না, চুপ ক’রে রইলে কেন?” কিন্তু, রমা তেমনি কাঠের কত বসিয়া রহিল। আক্বর আলি এবার চোখ খুলিয়া সোজা হইয়া বসিয়া বলিল,—“সাবাস! হাঁ,—মায়ের দুধ খায়েছিল বটে ছোটবাবু! লাঠি ধর্লে বটে!” বেণী ব্যস্ত এবং ক্রুদ্ধ হইয়া কহিল,—“সেই কথা বল্তেই ত বল্চি আক্বর! কার লাঠিতে তুই জখম হলি? সেই ছোঁড়ার, না তার সেই হিন্দুস্থানী চাকরটার?” আক্বরের ওষ্ঠপ্রান্তে ঈষৎ হাসি প্রকাশ পাইল। কহিল,—“সেই বেঁটে হিন্দুস্থানীটার? সে ব্যাটা লাঠির জানে কি বড়বাবু? কি বলিস্ রে গহর, তোর পয়লা চোটেই সে বসেছিল না রে?” আক্বরের দুই ছেলেই অদূরে জড়সড় হইয়া বসিয়াছিল। তাহারাও অনাহত ছিল না। গহর মাথা নাড়িয়া সায় দিল, কথা কহিল না। আক্বর কহিতে লাগিল,—“আমার হাতের চোট পেলে সে ব্যাটা বাঁচত না। গহরের লাঠিতেই ‘বাপ-করে’ বসে পড়্ল, বড়বাবু!” রমা উঠিয়া আসিয়া অনতিদূরে দাঁড়াইল। আক্বর তাহাদের পিরপুরের প্রজা। সাবেক দিনে লাঠির জোরে অনেক বিষয় হস্তগত করিয়া দিয়াছে। তাই আজসন্ধ্যার পরে ক্রোধে ও অভিমানে ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া রমা তাহাকে ডাকাইয়া আনিয়া, বাঁধ পাহারা দিবার জন্য পাঠাইয়া দিয়াছিল, এবং ভাল করিয়া একবার দেখিতে