অগ্নিবর্ষণ করিয়া মনে মনে অকথ্য গালিগালাজ করিতে লাগিল এবং রমার একান্ত নিরুদ্যম স্তব্ধতার কোন অর্থ বুঝিতে না পারিয়া তূঁষের আগুণে পুড়িতে লাগিল। সর্ব্বপ্রকার অনুনয় বিনয়, ভর্ৎসনা, ক্রোধ উপেক্ষা করিয়া আক্বর আলি ছেলেদের লইয়া যখন বিদায় হইয়া গেল, তখন রমার বুক চিরিয়া একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস বাহির হইয়া, অকারণে তাহার দুইচক্ষু অশ্রু প্লাবিত হইয়া উঠিল, এবং আজিকার এতবড় অপমান তাহার সম্পূর্ণ পরাজিত ও নিষ্ফল হওয়া সত্ত্বেও কেন যে, কেবলি মনে হইতে লাগিল, তাহার বুকের উপর হইতে একটা অতি গুরুভার পাষাণ নামিয়া গেল, তাহার কোন হেতুই সে খুঁজিয়া পাইল না। সারারত্রি তাহার ঘুম হইল না, সেই যে তারকেশ্বরে সুমুখে বসিয়া খাওয়াইয়াছিল, নিরস্তর তাহাই চোখের উপর ভাসিয়া বেড়াইতে লাগিল; এবং, যতই মনে হইতে লাগিল, সেই সুন্দর সুকুমার দেহের মধ্যে এত মায়া এবং এত তেজ কি করিয়া এমন স্বছন্দে শান্ত হইয়াছিল, ততই তাহার চোখের জলে সমস্ত মুখ ভাসিয়া যাইতে লাগিল।
ছেলেবেলায় একদিন রমেশ রমাকে ভালবাসিয়াছিল। নিতান্ত ছেলেমানুষি ভালবাসা, তাহাতে সন্দেহ নাই; কিন্তু সে যে কত গভীর, তাহা তারকেশ্বরে সে প্রথম অনুভব করিতে পারিয়াছিল। এবং আরও কত গভীর, সেইদিন সব চেয়ে