তাহারা ভয় করে না; কিন্তু, এ ক্ষেত্রে বিবাদ করিয়াও লাভ নাই। কারণ ইহাতে বিবাদই হইবে, যথার্থ উপকার কিছুই হইবে না। বরঞ্চ, তাহারা নিজেদের মধ্যে একটা ছোট রকমের ইস্কুল করিতে ইচ্ছা করে, এবং ছোটবাবু একটু সাহায্য করিলেই হয়। কলহ বিবাদে রমেশ নিজেও ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিল, সুতরাং ইহাকে আর বাড়াইয়া না তুলিয়া, ইহাদের পরামর্শ সুযুক্তি বিবেচনা করিয়া, সায় দিল এবং তখন হইতে এই নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিতেই ব্যাপৃত হইল। ইহাদের সম্পর্কে আসিয়া রমেশ শুধু যে নিজেকে সুস্থ বোধ করিল, তাহা নহে, এই একটা বৎসর ধরিয়া তাহার যত বলক্ষয় হইয়াছিল, তাহা ধীরে ধীরে যেন ভরিয়া আসিতে লাগিল। রমেশ দেখিল, কুঁয়াপুরের হিন্দু প্রতিবেশীর মত ইহারা প্রতিকথায় বিবাদ করে না; করিলেও তাহারা প্রতিহাত এক নম্বর রুজু করিয়া দিবার জন্য সদরে ছুটিয়া যায় না। বরঞ্চ মুরুব্বিদের বিচারফলই, সন্তষ্ট অসন্তষ্ট যে ভাবেই হোক্, গ্রহণ করিতে চেষ্টা করে। বিশেষতঃ বিপদের দিনে পরস্পরের সাহায্যার্থে এরূপ সর্ব্বান্তঃকরণে অগ্রহর হইয়া আসিতে, রমেশ ভদ্র, অভদ্র, কোন হিন্দু গ্রামবাসীকেই দেখে নাই।
একে ত জাতিভেদের উপর রমেশের কোনদিনই আস্থা ছিল না, তাহাতে এই দুই গ্রামের অবস্থা পাশাপাশি তুলনা করিয়া তাহার অশ্রদ্ধা শতগুণে বাড়িয়া গেল। সে স্থির করিল, হিন্দুদিগের মধ্যে ধর্ম্ম ও সামাজিক অসমতাই