এই হিংসাদ্বেষের কারণ। অথচ, মুসলমানমাত্রই ধর্ম্মসম্বন্ধে পরস্পর সমান, তাই একতার বন্ধন ইহাদের মত হিন্দুদের নাই এবং হইতেও পারে না। আর জাতিভেদ নিবারণ করিবার কোন উপায় যখন নাই, এমন কি, ইহার প্রসঙ্গ উত্থাপন করাও যখন পল্লীগ্রামে একরূপ অসম্ভব, তখন কলহবিবাদের লাঘব করিয়া সখ্য ও প্রীতি সংস্থাপনে প্রয়াস করাই পণ্ডশ্রম। সুতরাং এই কয়টা বৎসর ধরিয়া সে নিজের গ্রামের জন্য যে বৃথা চেষ্টা করিয়া মরিয়াছিল, সে জন্য তাহার অত্যন্ত অনুশোচনা বোধ হইতে লাগিল। তাহার নিশ্চয় প্রতীতি হইল, ইহারা এম্নি খাওয়া-খায়ি করিয়াই চিরদিন কাটাইয়াছে, এবং, এমনি করিয়াই চিরদিন কাটাইতে বাধ্য। ইহাদের ভালো কোন দিন কোনমতেই হইতে পারে না! কিন্তু, কথাটা পাকা করিয়া লওয়া ত চাই। নানা কারণে অনেক দিন হইতে তাহার জ্যাঠাইমার সঙ্গে দেখা হয় নাই। সেই মারামারির পর হইতে কতকটা ইচ্ছা করিয়াই সে সেদিকে যায় নাই। আজ ভোরে উঠিয়া সে একেবারে তাঁর ঘরের দোরগোড়ায় আসিয়া দাঁড়াইল। জ্যাঠাইমার বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার উপর তাহার এমনি বিশ্বাস ছিল যে, সে কথা তিনি নিজেও জানিতেন না। রমেশ একটুখানি আশ্চর্য্য হইয়াই দেখিল, জ্যাঠাইমা এত প্রত্যূষেই স্নান করিয়া প্রস্তুত হইয়া সেই অস্পষ্ট আলোকে ঘরের মেঝের বসিয়া, চোখে চস্মা আঁটিয়া,