একখানি বই পড়িতেছেন। তিনিও বিস্মিত কম হইলেন না। বইখানি বন্ধ করিয়া তাঁহাকে আদর করিয়া ঘরে ডাকিয়া বসাইলেন এবং মুখ পানে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,—“এত সকালেই যে রে?” রমেশ কহিল,—“অনেক দিন তোমাকে দেখ্তে পাইনি জ্যাঠাইমা। আমি পিরপুরে একটা ইস্কুল কর্চি।” বিশ্বেশ্বরী বলিলেন,—“শুনেচি। কিন্তু, আমাদের ইস্কুলে আর পড়াতে যাস্নে কেন বল্ত?” রমেশ কহিল,—“সেই কথাই বল্তে এসেচি জ্যাঠাইমা! এদের মঙ্গলের চেষ্টা করা শুধু পণ্ডশ্রম। যারা কেউ কারো ভাল দেখ্তে পারে না, অভিমান অহঙ্কার যাদের এত বেশী, তাদের মধ্যে খেটে মরায় লাভ কিছুই নেই, শুধু, মাঝ্থেকে নিজেরই শত্রু বেড়ে ওঠে। বরং, যাদের মঙ্গলের চেষ্টায় সত্যকার মঙ্গল হবে, আমি সেখানেই পরিশ্রম করব!” জ্যাঠাইমা কহিলেন—“একথা ত নতুন নয় রমেশ! পৃথিবীতে ভাল করবার ভার যে কেউ নিজের ওপর নিয়েচে, চিরদিনই তাঁর শত্রু সংখ্যা বেড়ে উঠেচে। সেই ভয়ে যারা পেছিয়ে দাঁড়ায়, তুইও তাহাদের দলে গিয়ে যদি মিশিস্, তা হ’লে ত চল্বে না বাবা! এ গুরুভার ভগবান্ তোকেই বইতে দিয়েচেন, তোকেই ব’য়ে বেড়াতে হবে। কিন্তু, হাঁরে, রমেশ, তুই নাকি ওদের হাতে জল খাস?” রমেশ হাসিয়া কহিল,—“এই দ্যাখ জ্যাঠাইমা, এর মধ্যেই তোমার কাণে উঠেচে। এখনো খাইনি বটে, কিন্তু, খেতে ত আমি