বাবা! যে জন্যে তোর মন থেকে সংশয় ঘুচ্তে চাইচে না,—সেই জাতের ছোটবড় নিয়ে মারামারি করাটা উন্নতির একটা লক্ষণ,——কারণ নয় রমেশ। সেটা সকলের আগে না হ’লেই নয়, মনে ক’রে যদি তাকে নিয়েই নাড়াচাড়া কর্তে যাস্, এদিক্-ওদিক্ দু’দিক্ নষ্ট হয়ে যাবে। কথাটা সত্যি কি না, যাচাই কর্তে চাস্, রমেশ, সহরের কাছাকাছি দু’চারখানা গ্রাম ঘুরে এসে, তাদের সঙ্গে তোর এই কুঁয়াপুরকে মিলিয়ে দেখিস্। আপনি টের পাবি।” কলিকাতার অতি নিকটবর্ত্তী একখানা গ্রামের সহিত রমেশের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ছিল। তাহারই মোটামুটি চেহারাটা সে মনে মনে দেখিয়া লইবার চেষ্টা করিতেই, অকস্মাৎ তাঁহার চোখের উপর হইতে যেন একটা কালো পর্দ্দা উঠিয়া গেল; এবং গভীর সম্ভ্রম ও বিস্ময়ে চুপ করিয়া সে বিশ্বেশ্বরীর মুখের পানে চাহিয়া রহিল। তিনি কিন্তু, সেদিকে কিছুমাত্র লক্ষ্য না করিয়া নিজের পূর্ব্বানুবৃত্তিস্বরূপে ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন,—“তাই ত তোকে বার বার বলি, বাবা, তুই যেন তোর জন্মভূমি ত্যাগ ক’রে যাস্নে। তোর মত বাইরে থেকে যারা বড় হ’তে পেরেচে, তারা যদি তোর মতোই গ্রামে ফিরে আস্ত, সমস্ত সম্বন্ধ বিছিন্ন ক’রে চ’লে না যেত, পল্লীগ্রামের এমন দুরবস্থা হ’তে পার্ত না। তারা কখনই গোবিন্দ গাঙুলীকে মাথায় তুলে নিয়ে তোকে দূরে সরিয়ে দিতে পার্ত না।” রমেশের রমার কথা মনে পড়িল। তাই আবার অভিমানের সুরে কহিল,—“দূরে স’রে যেতে আমারও