তাহার অস্বাভাবিক শুষ্কতা রমার দৃষ্টি এড়াইল না। সে তেমনি মুখের প্রতি চোখ রাখিয়া কহিল,—“আগে কথা দিন।” রমেশ ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া, মাথা নাড়িয়া কহিল,—“তা’ পারিনে। তোমাকে কিছুমাত্র প্রশ্ন না কোরেই আমার কথা দেবার শক্তি তুমি নিজের হাতেই যে ভেঙে দিয়েছ রমা!”
রমা আশ্চর্য্য হইয়া কহিল, “আমি?” রমেশ বলিল, “তুমি ছাড়া এ শক্তি আর কারু ছিল না। রমা, আজ তোমাকে একটা সত্যকথা বল্ব! ইচ্ছে হয় বিশ্বাস কোরো, না হয় কোরো না। কিন্তু, জিনিসটা যদি না একেবারে ম’রে নিঃশেষ হয়ে যেত, হয় ত কোনদিনই এ কথা তোমাকে শোনাতে পার্তাম না!” বলিয়া একটুখানি চুপ করিয়া, পুনরায় কহিল,—“আজ না কি আর কোনপক্ষেরই লেশমাত্র ক্ষতিবৃদ্ধির সম্ভাবনা নাই, তাই আজ জানাচ্চি, তোমাকে অদেয় আমার সেদিন পর্য্যন্ত কিছুই ছিল না। কিন্তু কেন জান?” রমা মাথা নাড়িয়া জানাইল,—‘না।’ কিন্তু, সমস্ত অন্তঃকরণটা তাহার কেমন একটা লজ্জাকর আশঙ্কায় কণ্টকিত হইয়া উঠিল। রমেশ কহিল,—“কিন্তু, শুনে রাগ কোরো না, কিছুমাত্র লজ্জাও পেয়ো না। মনে কোরো, এ কোন্ পুরাকালের একটা গল্প শুন্চ মাত্র।” রমা মনে মনে প্রাণপণে বাধা দিবার ইচ্ছা করিল, কিন্তু মাথা তাহার এমনি ঝুঁকিয়া পড়িল যে, কিছুতেই সোজা করিয়া তুলিতে পারিল না। রমেশ