পীর পয়গম্বর ব’লে ঠিক ক’রে ব’সে আছে।” রমার নিজের বুকের ভিতরের এই কথাটা একবার বিদ্যুতের মত আলো করিয়া, খেলিয়া গেল, যদি তাহার নিজের নামটাও এই সঙ্গে যুক্ত হইয়া থাকিতে পারিত! কিন্তু, মুহূর্ত্তের জন্য। পরক্ষণেই দ্বিগুণ আঁধারে তাহার সমস্ত অন্তরটা আচ্ছন্ন হইয়া গেল। বেণী কহিতে লাগিল,“কিন্তু, আমিও অল্পে ছাড়্ব না। সে যে আমাদের সমস্ত প্রজা এম্নি ক’রে বিগ্ড়ে তুল্বে, আর জমিদার হয়ে আমরা চোখ মেলে, মুখ বুজে দেখ্ব, সে যেন কেউ স্বপ্নেও না ভাবে। এই ব্যাটা ভৈরব আচার্য্য এবার ভজুয়ার হ’য়ে সাক্ষী দিয়ে কি ক’রে তার মেয়ের বিয়ে দেয়, সে আমি একবার ভাল ক’রে দেখ্ব! আরও একটা ফন্দি আছে—দেখি গোবিন্দখুড়ো কি বলে! তার পর দেশে ডাকাতি লেগেই আছে। এবার চাকরকে যদি জেলে পূরতে পারি, ত তার মনিবকে পূরতেও আমাদের বেশি বেগ পেতে হবে না। সেই যে প্রথম দিনটিতেই তুমি বলেছিলে রমা, শত্রুতা কর্তে ইনিও কম কর্বেন না, সে যে এমন সত্যি হয়ে দাঁড়াবে তা’ আমিও মনে করিনি।” রমা কোন কথাই কহিল না। নিজের প্রতিজ্ঞা ও ভবিষ্যদ্বাণী এমন বর্ণে-বর্ণে সত্য হওয়ার বার্ত্তা পাইয়াও যে নারীর মুখ অহঙ্কারে উজ্জ্বল হইয়া উঠে না, বরঞ্চ নিবিড় কালিমায় আচ্ছন্ন হইয়া যায়, সে যে তাহার কি অবস্থা, সে কথা বুঝিবার শক্তি বেণীর নাই। তা’ না থাকুক, কিন্তু, জিনিসটা এতই স্পষ্ট যে, কাহারই দৃষ্টি এড়াইবার সম্ভা-