বনা ছিল না—তাহারও এড়াইল না। মনে মনে একটু বিস্ময়াপন্ন হইয়াই বেণী রান্নাঘরে যাইয়া মাসীর সহিত দুই একটা কথা কহিয়া বাড়ী ফিরিতেছিল, রমা হাত নাড়িয়া তাহাকে কাছে ডাকিয়া মৃদুস্বরে কহিল,—“আচ্ছা বড়দা’, রমেশদা’ যদি জেলেই যান, সে কি আমাদের নিজেদের ভারি কলঙ্কের কথা নয়?” বেণী অধিকতর আশ্চর্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিল,—“কেন?” রমা কহিল,—“আমাদের আত্মীয়, আমরা যদি না বাঁচাই, সমস্ত লোক আমাদেরই ত ছি ছি ক’র্বে!” বেণী জবাব দিল,—“যে যেমন কাজ কর্বে, সে তার ফল ভুগ্বে, আমাদের কি?” রমা তেম্নি মৃদুকণ্ঠে কহিল,—“কিন্তু, রমেশদা’ সত্যিই ত আর চুরি-ডাকাতি ক’রে বেড়ান না। বরং, পরের ভালর জন্যই নিজের সর্ব্বস্ব দিচ্চেন, সে কথা ত কারো কাছে চাপা থাক্বে না। তার পর আমাদের নিজেদেরও ত গাঁয়ের মধ্যে মুখ বার করতে হবে!” বেণী হি-হি করিয়া খুব খানিকটা হাসিয়া লইয়া কহিল,—“তোর হ’ল কি, বল্ত বোন্?” রমা এই লোকটার মুখের সঙ্গে রমেশের মুখখানা মনে মনে একবার দেখিয়া লইয়া আর যেন সোজা করিয়া মাথা তুলিতেই পারিল না। কহিল,—“গাঁয়ের লোক ভয়ে মুখের সাম্নে কিছু না বলুক, আড়ালে বল্বেই; তুমি বল্বে, আড়ালে রাজার মাকেও ডা’ন বলে, কিন্তু, ভগবান্ ত আছেন! নিরপরাধীকে মিছে করে শাস্তি দেওয়ালে তিনি ত রেহাই দেবেন না।” বেণী কৃত্রিম ক্ষোভ প্রকাশ