করিয়া কহিল,—“হা রে আমার কপাল! সে ছোঁড়া বুঝি ঠাকুরদেবতা কিছু মানে! শীতলাঠাকুরের ঘরটা প’ড়ে যাচ্চে—মেরামত কর্বার জন্যে তার কাছে লোক পাঠাতে সে হাঁকিয়ে দিয়ে বলেছিল,—‘যারা তোমাদের পাঠিয়েছে, তাদের বল গে বাজে খরচ কর্বার টাকা আমার নেই। শোন কথা! এটা তার কাছে বাজে খরচ? আর কাজের খরচ হচ্চে, মোচলমানদের ইস্কুল ক’রে দেওয়া। তা’ ছাড়া বামুনের ছেলে,—সন্ধ্যে-আহ্নিক কিছুই করে না! শুনি, মোচলমানের হাতে জল পর্য্যন্ত খায়। দু’পাতা ইংরিজী প’ড়ে আর কি তার জাতজন্ম আছে দিদি, কিছুই নেই। শাস্তি তার গেছে কোথা, সমস্তই তোলা আছে; সে একদিন সবাই দেখ্তে পাবে।” রমা আর বাদানুবাদ না করিয়া মৌন হইয়া রহিল বটে, কিন্তু, রমেশের অনাচার এবং ঠাকুরদেবতার প্রতি অশ্রদ্ধার কথা স্মরণ করিয়া, মনটা তাহার আবার তাহার প্রতি বিমুখ হইয়া উঠিল। বেণী নিজের মনে কথা কহিতে কহিতে চলিয়া গেল। রমা অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত একভাবে দাঁড়াইয়া থাকিয়া নিজের ঘরে গিয়া, মেঝের উপর ধপ্ করিয়া বসিয়া পড়িল। সে দিন তাহার একাদশী। খাবার হাঙ্গামা নাই মনে করিয়া আজ সে যেন স্বস্তিবোধ করিল।