পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৩২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৩০


এগারশ’ ছাব্বিশ টাকা সাত আনার ডিক্রি করিয়াছে এবং দুই একদিনের মধ্যেই তাহার বাস্তুভিটা ক্রোক করিয়া নিলাম ডাকিয়া লইবে। ইহা একতরফা ডিক্রি নহে। যথারীতি শমন বাহির হইয়াছে; কে তাহা ভৈরবের নাম দস্তখত করিয়া গ্রহণ করিয়াছে এবং ধার্য্যদিনে আদালতে হাজির হইয়া নিজেকে ভৈরব বলিয়া স্বীকার করিয়া, কবুলজবাব দিয়া আসিয়াছে। ইহার ঋণ মিথ্যা, আসামী মিথ্যা, ফরিয়াদী মিথ্যা। এই সর্ব্বব্যাপী মিথ্যার আশ্রয়ে সবল দুর্ব্বলের যথাসর্ব্বস্ব আত্মসাৎ করিয়া, তাহাকে পথের ভিখারী করিয়া, বাহির করিয়া দিবার উদ্যোগ করিয়াছে; অথচ, সরকারের আদালতে এই অত্যাচারের প্রতিকারের উপায় সহজ নহে। আইনমত সমস্ত মিথ্যাঋণ বিচারালয়ে গচ্ছিত না করিয়া কথাটি কহিবার জো নাই। মাথা খুঁড়িয়া মরিলেও কেহ তাহাতে কর্ণপাত করিবে না। কিন্তু এত টাকা দরিদ্র ভৈরব কোথায় পাইবে যে, তাহা জমা দিয়া, এই মহা-অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করিয়া আত্মরক্ষা করিবে। সুতরাং রাজার আইন, আদালত, জজ, ম্যাজিষ্ট্রেট্‌ সমস্ত মাথার উপর থাকিতেও দরিদ্র প্রতিদ্বন্দ্বীকে নিঃশব্দে মরিতে হইবে। অথচ, সমস্তই যে বেণী ও গোবিন্দ গাঙুলীর কাজ, তাহাতে কাহারও সন্দেহমাত্র নাই; এবং এই অত্যাচারের যত বড় দুর্গতিই ভৈরবের অদৃষ্টে ঘটুক, গ্রামের সকলেই চুপি চুপি জল্পনা করিয়া ফিরিবে, কিন্তু, একটি লোকও মাথা উঁচু করিয়া