মা কর্ত না। এ কথা সবাই জানে, কিন্তু উপায় ত নেই। কাচ্চাবাচ্চা নিয়ে আমাদের সকলকেরই ঘর কর্তে হয়; তাই তোমাকে নেমন্তন্ন কর্তে গেলে—বুঝ্লে না বাবা—ভৈরবকেও নেহাৎ দোষ দেওয়া যায় না—তোমরা সব আজকালকার সহরের ছেলে—জাতটাত তেমন ত কিছু মান্তে চাও না—তাইতেই—বুঝ্লে না, বাবা,—দু’দিন পরে ওর ছোট মেয়েটিও প্রায় বারোবছরের হ’ল ত—পার কর্তে হবে ত বাবা? আমাদের সমাজের কথা সবই জান বাবা—বুঝ্লে না বাবা—” রমেশ অধীরভাবে কহিল,—“আজ্ঞে হাঁ, বুঝেচি।” রমেশের বাড়ীর সদরদরজার কাছে দাঁড়াইয়া দীনু খুসি হইয়া কহিল,—“বুঝ্বে বৈ কি বাবা, তোমরা ত আর অবুঝ নও। ও ব্রাহ্মণকেই বা দোষ দিই কি ক’রে—আমাদের বুড়োমানুষের পরকালের চিন্তাটা—”
“আজ্ঞে হাঁ, সে ত ঠিক কথা-” বলিয়া রমেশ তাড়াতাড়ি ভিতরে প্রবেশ করিল। গ্রামের লোকে তাহাকে ‘একঘরে’ করিয়াছে, তাহা বুঝিতে তাহার আর বাকী রহিল না। নিজের ঘরের মধ্যে আসিয়া, ক্ষোভে, অভিমানে তাহার দুই চক্ষু জ্বালা করিয়া উঠিল। আজ এইটা তাহার সবচেয়ে বেশি বাজিল যে, বেণী ও গোবিন্দকেই ভৈরব আজ সাদরে ডাকিয়া আনিয়াছে; এবং গ্রামের লোক সমস্ত জানিয়া-শুনিয়াও ভৈরবের এই ব্যবহারটা শুধু মাপ করে নাই, সমাজের খাতিরে রমেশকে সে যে আহ্বান পর্য্যন্ত