পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৩৮


রমেশ যেমন ছিল, তেম্‌নি খাড়া উঠিয়া বাহির হইয়া গেল। আত্মসংবরণের কথাটা তাহার মনেও হইল না। প্রভুর রক্তচক্ষু দেখিয়া ভীত হইয়া, গোপাল জিজ্ঞাসা করিল,—“বাবু কি কোথাও যাচ্চেন?” “আস্‌চি” বলিয়া রমেশ দ্রুতপদে চলিয়া গেল। ভৈরবের বহির্বাটীতে ঢুকিয়া দেখিল, কেহ নাই। ভিতরে প্রবেশ করিল। তখন আচার্য্য-গৃহিণী সন্ধ্যাদীপ-হাতে প্রাঙ্গণের তুলসীমঞ্চ-মূলে আসিতেছিলেন; অকস্মাৎ রমেশকে সুমুখে দেখিয়া একেবারে জড়সড় হইয়া গেলেন। যে কখনও আসে না, সে যে আজ কেন আসিয়াছে, তাহা মনে করিতেই ভয়ে তাঁহার হৃৎপিণ্ড কণ্ঠের কাছে ঠেলিয়া আসিল! রমেশ তাঁহাকেই প্রশ্ন করিল,—“আচায্যি মশাই কৈ?” গৃহিণী অব্যক্তস্বরে যাহা বলিলেন, তাহা শোনা গেল না বটে, কিন্তু বুঝা গেল, তিনি ঘরে নাই। রমেশের গায়ে একটা জামা অবধি ছিল না। সন্ধ্যার অস্পষ্ট আলোকে তাহার মুখও ভাল দেখা যাইতেছিল না। এমন সময়ে ভৈরবের বড় মেয়ে লক্ষ্মী ছেলে-কোলে গৃহের বাহির হইয়াই এই অপরিচিত লোকটাকে দেখিয়া মাকে জিজ্ঞাসা করিল,—“কে মা?” তাহার জননী পরিচয় দিতে পারিলেন না, রমেশও কথা কহিল না। লক্ষ্মী ভয় পাইয়া চেঁচাইয়া ডাকিল,—“বাবা, কে একটা লোক উঠনে এসে দাঁড়িয়েচে, কথা কয় না।”

 “কে রে?” বলিয়া সাড়া দিয়া তাহার পিতা ঘরের