না শুনেচে? তুমি ব’লে তাই মুখ দেখাও, আর কেউ হ’লে গলায় দড়ি দিত!” বেণী লক্ষ্মীকে একটা তাড়া দিয়া বলিল,—“তুই থাম্ না লক্ষ্মী! কাজ কি ওসব কথায়?” লক্ষ্মী কহিল,—“কাজ নেই কেন? যার জন্যে বাবাকে এত দুঃখ পেতে হ’ল, তার হয়েই উনি কোঁদল করবেন? বাবা যদি আজ মারা যেতেন!” রমা নিমেষের জন্য স্তম্ভিত হইয়া গিয়াছিল মাত্র। বেণীর কৃত্রিম-ক্রোধের স্বর তাহাকে আবার প্রজ্বলিত করিয়া দিল। সে লক্ষ্মীর প্রতি চাহিয়া কহিল,—“লক্ষ্মী, ওঁর মত লোকের হাতে মর্তে পাওয়াও ভাগ্যের কথা; আজ মারা পড়লে তোমার বাবা স্বর্গে যেতে পার্ত।” লক্ষ্মীও জ্বলিয়া উঠিল,—“ওঃ, তাইতেই বুঝি তুমি মরেচ, রমাদিদি?” রমা আর জবাব দিল না। তাহার দিক্ হইতে মুখ ফিরাইয়া লইয়া বেণীর প্রতি চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিল,—“কিন্তু কথাটা কি, তুমিই বল ত বড়দা’?” বলিয়া সে একদৃষ্টে চাহিয়া রহিল। তাহার দৃষ্টি যেন অন্ধকার ভেদ করিয়া বেণীর বুকের ভিতর পর্য্যন্ত দেখিতে লাগিল। বেণী ক্ষুব্ধভাবে বলিলেন,—“কি ক’রে জান্ব বোন! লোকে কত কথা বলে—তাতে কান দিলে ত চলে না।” “লোকে কি বলে?”
বেণী পরম-তাচ্ছল্যভাবে কহিলেন,—“বললেই বা রমা, লোকের কথাতে ত আর গায়ে ফোস্কা পড়ে না। বলুক না।” তাহার এই কপট সহানুভূতি রমা টের পাইল। এক মুহূর্ত্ত