পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৪৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪৫
পল্লী-সমাজ


 কিন্তু লুকাইয়া থাকিবার সুযোগ তাহার ঘটিল না। আজ বৈকালে পীরপুরের মুসলমান প্রজারা তাহাদের পঞ্চায়েত বৈঠকে উপস্থিত হইবার জন্য তাহাকে ডাকিতে আসিল। এ বৈঠকের আয়োজন রমেশ নিজেই কিছুদিন পূর্ব্বে করিয়া আসিয়াছিল। সেইমত, তাহারা আজ একত্র হইয়া ছোট বাবুর জন্যই অপেক্ষা করিয়া বসিয়া আছে বলিয়া যখন সংবাদ দিয়া গেল, তখন তাহাকে যাইবার জন্য উঠিতেই হইল। কেন, তাহা বলিতেছি।

 রমেশ সন্ধান লইয়া জানিয়াছিল, প্রত্যেক গ্রামেই কৃষকদিগের মধ্যে দরিদ্রের সংখ্যা অত্যন্ত অধিক; অনেকেরই এক ফোঁটা জমি-জায়গা নাই; পরের জমিতে খাজনা দিয়া বাস করে, এবং পরের জমিতে ‘জন’ খাটিয়া উদরান্নের সংস্থান করে। দু’দিন কাজ না পাইলে, কিংবা অসুখ-বিসুখে কাজ করিতে না পারিলেই, সপরিবারে উপবাস করে। খোঁজ করিয়া আরও অবগত হইয়াছিল যে, ইহাদের অনেকেরই একদিন সঙ্গতি ছিল, শুধু ঋণের দায়েই সমস্ত গিয়াছে। ঋণের ব্যবস্থাও সোজা নয়। মহাজনেরা জমি বাঁধা রাখিয়া ঋণ দেয়, কিন্তু প্রায়ই সুদ গ্রহণ করে না; ফসলের অংশ দাবী করে। সুদ কষিলে এই অংশের মূল্য সময়ে সময়ের আসলের অনতিদূরে গিয়া পৌঁছে। সুতরাং একবার যে কোন কৃষক সামাজিক ক্রিয়াকর্ম্মের দায়েই হৌক, বা অনাবৃষ্টির অতিবৃষ্টির জন্যই হৌক্‌, ঋণ করিতে বাধ্য হয়, সে
  ১০