পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৫৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫৫
পল্লী-সমাজ


অস্ত্র থাকা ত দূরের কথা, একটা তৃণ পর্য্যন্ত ছিল না। সে আদালতে এ কথা ত কেহ তাহাকে জিজ্ঞাসা পর্য্যন্ত করিবে না, সে কি স্মরণ করিতে পারে এবং কি পারে না! কিন্তু এখানকার আদালতে সত্য বলিবার যে তাহার এতটুকু পথ ছিল না! বেণী প্রভৃতির হাতধরা পল্লী-সমাজ সত্য চাহে নাই। সুতরাং সত্যের মূল্যে তাহাকে যে মিথ্যা অপবাদের গাঢ় কালী নিজের মুখময় মাখিয়া, এই সমাজের বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইতে হইবে—এমন ত অনেকেই হইয়াছে—এ কথা সে যে নিঃসংশয়ে জানিত। তা ছাড়া, এত বড় গুরুদণ্ডের কথা, রমা স্বপ্নেও কল্পনা করে নাই। বড় জোর দু’শ-একশ’ জরিমানা হইবে, ইহাই জানিত। বরঞ্চ, বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও রমেশ যখন তাহার কাজ ছাড়িয়া কোনমতেই পলাইতে স্বীকার করে নাই, তখন রাগ করিয়া রমা মনে মনে এ কামনাও করিয়াছিল, হৌক জরিমানা। একবার শিক্ষা হইয়া যাক্‌। কিন্তু সে শিক্ষা যে এমন করিয়া হইবে, রমেশের রোগক্লিষ্ট পাণ্ডুর মুখের প্রতি চাহিয়াও বিচারকের দয়া হইবে না—একেবারে ছয় মাস সশ্রম-কারাবাসের হুকুম করিয়া দিবে—তাহা সে ভাবে নাই। সেই সময়ে রমা নিজে রমেশের দিকে চাহিয়া দেখিতে পারে নাই। পরের মুখে শুনিয়াছিল, রমেশ একদৃষ্টে তাহারই মুখের পানে চাহিয়াছিল, এবং জেলের হুকুম হইয়া গেলে, গোপাল সরকারের প্রার্থনার উত্তরে মাথা নাড়িয়া কহিয়াছিল,—“না। ম্যাজিষ্ট্রেট আমাকে সারাজীবন