পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৪


করিতেছিল। আজ অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত রমেশ বাড়ীর ভিতরে কাজকর্ম্মে ব্যস্ত ছিল। কি জন্যে বাহিরে আসিতেই দেখিল, ইতিমধ্যে জন-দুই প্রাচীন ভদ্রলোক আসিয়া, বৈঠকখানার বিছানায় সমাগত হইয়া ধূমপান করিতেছেন। সম্মুখে আসিয়া সবিনয়ে কিছু বলিবার পূর্ব্বেই, পিছনে শব্দ শুনিয়া ফিরিয়া দেখিল, এক অতি বৃদ্ধ ৫।৬টি ছেলেমেয়ে লইয়া কাসিতে কাসিতে বাড়ী ঢুকিলেন। তাঁহার কাঁধের উপর মলিন উত্তরীয়, নাকের উপর একযোড়া ভাঁটার মত মস্ত চস্‌মা,—পিছনে দড়ি দিয়া বাঁধা শাদা চুল, শাদা গোঁফ—তামাকের ধুঁয়ায় তাম্রবর্ণ। অগ্রসর হইয়া আসিয়া তিনি সেই ভীষণ চস্‌মার ভিতর দিয়া রমেশের মুখের দিকে মুহূর্ত্তকাল চাহিয়া বিনা বাক্যব্যয়ে কাঁদিয়া ফেলিলেন। রমেশ চিনিল না ইনি কে, কিন্তু যেই হোন্‌, ব্যস্ত হইয়া কাছে আসিয়া তাঁহার হাত ধরিতেই, তিনি ভাঙা-গলায় বলিয়া উঠিলেন,—“না বাবা রমেশ, তারিণী যে এমন ক’রে ফাঁকি দিয়ে পালাবে, তা স্বপ্নেও জানিনে, কিন্তু আমারও এমন চাটুয্যে–বংশে জন্ম নয় যে, কারু ভয়ে মুখ দিয়ে মিথ্যা কথা বেরুবে। আসবাব সময় তোমার বেণী ঘোষালের মুখের সাম্‌নে ব’লে এলুম, আমাদের রমেশ যেমন শ্রাদ্ধের আয়োজন কর্‌চে, এমন করা চুলোয় যাক্‌, এ অঞ্চলে কেউ চোখেও দেখেনি।” একটু থামিয়া বলিলেন, “আমার নামে অনেক শালা অনেক রকম ক’রে তোমার কাছে লাগিয়ে যাবে বাবা’, কিন্তু এটা নিশ্চয়