চাহিল। চক্ষের নিমেষে বেণীর ক্রুদ্ধ মুখ ভয়ে বিবর্ণ হইয়া গেল। সনাতন কহিতে লাগিল,—“ঠাকুরের সুমুখে মিথ্যে বল্চিনে বড়বাবু, একটু সাম্লে-সুম্লে থাক্বেন। রাত-বিরিতে বার হবেন না—কে কোথায় ওত পেতে ব’সে থাক্বে, বলা যায় না ত!” বেণী কি একটা বলিতে গেল, কিন্তু মুখ দিয়া তাহার কথা বাহির হইল না! তাহার মত ভীরু লোক বোধ করি সংসারে ছিল না।
এতক্ষণে রমা কথা কহিল। স্নেহার্দ্র করুণকণ্ঠে প্রশ্ন করিল,—“সনাতন, ছোটবাবুর জন্যেই বুঝি তোমাদের সব এত রাগ?” সনাতন প্রতিমার দিকে একবার দৃষ্টিপাত করিয়া কহিল,—“মিথ্যে ব’লে আর নরকে যাব কেন দিদিঠাক্রুণ, তাই বটে! তবে, মোচনমানদের রাগটাই সবচেয়ে বেশি। তারা ছোটবাবুকে হিঁদুদের পয়গম্বর মনে করে। তার সাক্ষী দেখুন, আপনারা—জাফর আলি, আঙুল দিয়ে যার জল গলে না, সে ছোটবাবুর জেলের দিন তাদের ইস্কুলের জন্যে একটি হাজার টাকা দান করেচে! শুনি মস্জিদে তাঁর নাম ক’রে নাকি নেমাজপড়া পর্য্যন্ত হয়।” রমার শুষ্ক ম্লান মুখখানি অব্যক্ত-আনন্দে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। সে চুপ করিয়া প্রদীপ্ত নির্নিমেষ চোখে সনাতনের মুখের পানে চাহিয়া রহিল। বেণী অকস্মাৎ সনাতনের হাত চাপিয়া ধরিয়া কহিল,—“তোকে একবার দারোগার কাছে গিয়ে বল্তে হবে সনাতন! তুই যা’ চাইবি তাই তোকে দেব, দু’বিঘে জমি ছাড়িয়ে নিতে চাস্ ত তাই পাবি, ঠাকুরের