সাম্নে দাঁড়িয়ে দিব্যি কর্চি সনাতন, বামুনের কথাটা রাখ্।” সনাতন বিস্মিতের মত কিছুক্ষণ বেণীর মুখপানে চাহিয়া থাকিয়া কহিল,—“আর ক'টা দিন বা বাঁচ্ব বড়বাবু! লোভে পড়ে যদি এ কাজ করি, মর্লে আমাকে তোলা চুলোয় যাক্, পা দিয়েও কেউ ছোঁবে না! সে দিন-কাল আর নেই বড়বাবু,—সে দিন-কাল আর নেই! ছোটবাবু সব উল্টে দিয়ে গেছে।” গোবিন্দ কহিল,—“বামুনের কথা তা হ’লে রাখ্বিনে বল্?” সনাতন মাথা নাড়িয়া বলিল,“না। বল্লে তুমি রাগ কর্বে গাঙ্গুলিমশাই, কিন্তু, সেদিন পীরপুরের নূতন ইস্কুলঘরে ছোটবাবু বলেছিলেন, ‘গলায় গাছকতক সুতো ঝোলানো থাক্লেই বামুন হয় না।’ আমি ত আর আজকের নয় ঠাকুর, সব জানি। যা ক’রে তুমি বেড়াও, সে কি বামুনের কাজ? তোমাকেই জিজ্ঞাসা কর্চি, দিদিঠাক্রুণ, তুমিই বল দেখি?” রমা নিরুত্তরে মাথা হেঁট করিল। সনাতন উৎসাহিত হইয়া মনের আক্রোশ মিটাইয়া বলিতে লাগিল,—“বিশেষ ক’রে ছোঁড়াদের দল। ছোটবাবুর জেল হওয়া থেকে এই দুটো গাঁয়ের যত ছোকরা, সন্ধ্যের পর সবাই গিয়ে জোটে জাফর আলির বাড়ীতে। তারা ত চারিদিকে, পষ্ট ব’লে বেড়াচ্চে, জমিদার ত ছোটবাবু! আর সব চোর-ডাকাত। তা ছাড়া খাজনা দিয়ে বাস কর্ব—ভয় কারুকে কর্ব না। আর বামুনের মত থাকে ত বামুন, না থাকে আমরাও যা’ তারাও তাই।” বেণী আতঙ্কে পরিপূর্ণ হইয়া শুষ্কমুখে প্রশ্ন করিল,—“সনাতন, আমার