ওপরেই তাদের এত রাগ কেন, বল্তে পারিস্?” সনাতন কহিল,—“রাগ কোরো না বড়বাবু, কিন্তু আপনি যে সকল নষ্টের গোড়া, তা তাদের জান্তে বাকী নেই।” বেণী চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। ছোটলোক সনাতনের মুখে এমন কথাটা শুনিয়াও সে রাগ করিল না, কারণ, রাগ করিবার মত মনের অবস্থা তাহার ছিল না—তাহার বুকের ভিতর ঢিপ-ঢিপ করিতেছিল। গোবিন্দ কহিল,—“তা হ’লে জাফরের বাড়ীতেই আড্ডা বল্? সেখানে তারা কি করে, বলতে পারিস্?” সনাতন তাঁহার মুখপানে চাহিয়া কি যেন চিন্তা করিল। শেষে কহিল,—“কি করে তারা, জানিনে, কিন্তু ভাল চাও ত সে মতলব কোরো না ঠাকুর। তারা হিন্দুমুসলমান ভাই সম্পর্ক পাতিয়েচে—এক মন, এক প্রাণ। ছোটবাবুর জেল হওয়া থেকে, সব রাগে বারুদ হয়ে আছে, তার মধ্যে গিয়া চক্মকি ঠুকে আগুন জ্বাল্তে যেও না ঠাকুর!”
সনাতন চলিয়া গেলে, বহুক্ষণ পর্য্যন্ত কাহারও কথা কহিবার প্রবৃত্তি রহিল না। রমা উঠিয়া যাইবার উপক্রম করিতে বেণী বলিয়া উঠিল,—“ব্যাপার শুনলে রমা?” রমা মুচকিয়া হাসিল, কথা কহিল না। হাসি দেখিয়া বেণীর গা জ্বলিয়া গেল, কহিল,—“শালা ভৈরবের জন্যেই এত কাণ্ড। আর তুমি না যাবে সেখানে, না তাকে ছাড়িয়ে দেবে, এ সব কিছুই হ’ত না। তুমি ত হাস্বেই রমা, মেয়েমানুষ, বাড়ীর বার হ’তে ত হয় না, কিন্তু আমাদের উপায় কি হবে বল ত?
১১