পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

১৫

জেনো, এই ধর্ম্মদাস শুধু ধর্ম্মেরই দাস,আর কারো নয়।” এই বলিয়া বৃদ্ধ সত্য-ভাষণের সমস্ত পৌরুষ আত্মসাৎ করিয়া লইয়া, গোবিন্দ গাঙ্গুলীর হাত হইতে হুঁকাটা ছিনিয়া লইয়া তাহাতে এক টান্‌ দিয়াই প্রবলবেগে কাসিয়া ফেলিলেন।

 ধর্ম্মদাস নিতান্ত অত্যুক্তি করে নাই। উদ্যোগ-আয়োজন যেরূপ হইতেছিল, এদিকে সেরূপ কেহ করে নাই। কলিকাতা হইতে ময়রা আসিয়াছিল, তাহারা প্রাঙ্গণের একধারে ভিয়ান চড়াইয়াছিল। সেদিকে পাড়ার কতকগুলা ছেলেমেয়ে ভিড় করিয়া দাঁড়াইয়াছিল। কাঙ্গালীদের বস্ত্র দেওয়া হইবে। চণ্ডীমণ্ডপের ও-ধারের বারান্দায় অনুগত ভৈরব আচার্য্য থান ফাড়িয়া পাট করিয়া, গাদা করিতেছিল—সে দিকেও জনকয়েক লোক থাবা পাতিয়া বসিয়া এই অপব্যয়ের পরিমাণ হিসাব করিয়া, মনে মনে রমেশের নির্ব্বুদ্ধিতার জন্য তাহাকে গালি পাড়িতেছিল। গরীব-দুঃখী সংবাদ পাইয়া অনেক দূরের পথ হইতেও আসিয়া জুটিতেছিল। লোকজন, প্রজাপাঠক বাড়ী পরিপূর্ণ করিয়া, কেহ কলহ করিতেছিল, কেহ বা মিছামিছি শুধু কোলাহল করিতেছিল। চারিদিকে চাহিয়া ব্যয়বাহুল্য দেখিয়া, ধর্ম্মদাসের কাসি আরও বাড়িয়া গেল।

 প্রত্যুত্তরে রমেশ সঙ্কুচিত হইয়া ‘না না’ বলিয়া আরও কি বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু ধর্ম্মদাস হাত নাড়িয়া থামাইয়া