করিয়া কহিলেন,—“না রমা, অনুতাপ আমি সে জন্যে করিনে। কিন্তু, তুইও শুনে রাগ করিস্নে মা,—এইবার তাকে তোরা নাবিয়ে এনে সকলের সঙ্গে যে মিলিয়ে দিলি, তাতে তোদের অধর্ম্ম যতই বড় হোক্, সে কিন্তু ফিরে এসে এবার যে ঠিক সত্যটির দেখা পাবে, এ কথা আমি বড় গলা করেই ব’লে যাচ্চি।” রমা কথাটা বুঝিতে না পারিয়া কহিল,—“কিন্তু, এতে তিনি কেন নেবে যাবেন জ্যাঠাইমা? আমাদের অন্যায় অধর্ম্মের ফলে যত বড় যাতনাই তাঁকে ভোগ ক’র্তে হোক, আমাদের দুষ্কৃতি আমাদেরই নরকের অন্ধকূপে ঠেলে দেবে, তাঁকে স্পর্শ ক’র্বে কেন?” বিশ্বেশ্বরী ম্লানভাবে একটুখানি হাসিয়া বলিলেন,—“কর্বে বই কি মা; নইলে পাপ আর এত ভয়ঙ্কর কেন? উপকারের প্রত্যুপকার কেউ যদি নাই করে, এমন কি, উল্টে অপকারই করে, তাতেই বা কি এসে যায় মা, যদি না তাঁর কৃতজ্ঞতায় দাতাকে নাবিয়ে আনে! তুই ব’ল্চিস মা, কিন্তু, তোদের কুঁয়াপুর রমেশকে কি আর তেম্নিটি পাবে? সে ফিরে এলে তোরা স্পষ্ট দেখ্তে পাবি, সে, যে হাত দিয়ে দান ক’রে বেড়াতো, ভৈরব তার সেই ডানহাতটাই মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েচে।” তার পরে একটুখানি থামিয়া নিজেই বলিলেন,—“কিন্তু, কে জানে! হয় ত ভালই হয়েচে। তার বলিষ্ঠ সমগ্র হাতের অপর্য্যাপ্ত দান গ্রহণ করবার শক্তি যখন গ্রামের লোকের ছিল না, তখন এই ভাঙা হাতটাই বোধ করি এবার তাদের সত্যকার কাজে লাগবে।” বলিয়া তিনি