আর্দ্র হইয়া গেল। সে মনে করিল, কিছু একটা হইয়াছেই। তাই, সে কথা শুনিবার জন্য আর পীড়াপীড়ি করিল না। কিন্তু, বেণী যে জন্য এই ভূমিকাটি করিল, তাহা ফাঁসিয়া যাইতেছে দেখিয়া সে নিজেই মনে মনে ছট্ফট্ করিতে লাগিল। মিনিট দুই নিঃশব্দে কাটার পরে, সে আবার একটা নিঃশ্বাসের দ্বারা রমেশের মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া ধীরে ধীরে কহিল,—“আমার এই একটা জন্মগত দোষ যে, কিছুতেই মনে এক, মুখে আর কর্তে পারিনে। মনের ভাব আর পাঁচজনের মত ঢেকে রাখ্তে পারিনি বলে কত শাস্তিই যে, ভোগ কর্তে হয়, কিন্তু, তবু ত আমার চৈতন্য হল না!” রমেশ চুপ করিয়া শুনিতেছে দেখিয়া, বেণী কণ্ঠস্বর আরও মৃদু ও গম্ভীর করিয়া কহিতে লাগিল,—“আমার দোষের মধ্যে সে দিন মনের কষ্ট আর চাপ্তে না পেরে কাঁদ্তে কাঁদ্তে বলে ফেলেছিলাম, রমা, আমরা তোর এমন কি অপরাধ করেছিলাম যে, এই সর্ব্বনাশ আমাদের কর্লি! জেল হয়েছে শুন্লে যে মা একেবারে প্রাণ-বিসর্জ্জন কর্বেন! আমরা ভায়ে ভায়ে বিষয় নিয়ে ঝগড়া করি—যা’ করি, কিন্তু, তবু ত সে আমার ভাই! তুই একটি আঘাতে আমার ভাইকে মার্লি, মাকে মার্লি! কিন্তু, নির্দ্দোষীর ভগবান্ আছেন।” বলিয়া সে গাড়ীর বাহিরে আকাশের পানে চাহিয়া আর একবার যেন নালিশ জানাইল। রমেশ যদিও এ অভিযোগে যোগ দিল না, কিন্তু মন দিয়া শুনিতে লাগিল। বেণী একটু থামিয়া কহিল,