পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৮০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৭৮


করিয়া লইয়াছে, ইহাই তাহার ধারণা। গ্রামে আসিয়াই মুখে মুখে শুনিয়াছিল, শুধু একা রমাই যে তাহার সমস্ত দুঃখের মূল, তাহা সবাই জানে। সুতরাং এইখানে বেণী যে মিথ্যা কথা কহে নাই, তাহাতে আর তাহার সন্দেহ রহিল না। দিন পাঁচছয় পরে বেণী আসিয়া রমেশকে চাপিয়া ধরিল। পীরপুরের একটা বড় বিষয়ের অংশ-বিভাগ লইয়া বহুদিন হইতে রমার সহিত তাহার প্রচ্ছন্ন মনোবিবাদ ছিল। এই সুযোগে সেটা হস্তগত করিয়া লওয়া তাহার উদ্দেশ্য। বেণী বাহিরে যাহাই বলুক, সে মনে মনে রমাকে ভয় করিত। এখন সে শয্যাগত, মামলা-মোকদ্দমা করিতে পারিবে না; উপরন্তু তাহাদের মুসলমান প্রজারাও রমেশের কথা ঠেলিতে পারিবে না। পরে যাই হোক্‌, আপাততঃ বেদখল করিবার এমন অবসর আর মিলিবে না, বলিয়া সে একেবারে জিদ্‌ ধরিয়া বসিল। রমেশ আশ্চর্য্য হইয়া অস্বীকার করিতেই বেণী বহু প্রকারের যুক্তিপ্রয়োগ করিয়া শেষে কহিল,—“হবে না কেন? বাগে পেয়ে সে কবে তোমাকে রেয়াৎ করেচে যে, তার অসুখের কথা তুমি ভাব্‌তে যাচ্চ? তোমাকে যখন সে জেলে দিয়েছিল, তখন তোমার অসুখই বা কোন্ কম ছিল ভাই!” কথাটা সত্য। রমেশ অস্বীকার করিতে পারিল না। তবু, কেন যে তাহার মন কিছুতেই তাহার বিপক্ষতা করিতে চাহিল না, বেণীর সহস্র কটু উত্তেজনা সত্ত্বেও রমার অসহায়, পীড়িত অবস্থা মনে করিতেই তাহার সমস্ত বিরুদ্ধশক্তি সঙ্কুচিত হইয়া