না, পথ হাঁটাহাঁটি ক’রে মর্তে হবে না। না বাবু, আপনি যা’ হুকুম কর্বেন, ভাল হোক্, মন্দ হোক্, আমরা তাতেই রাজী হ’য়ে, আপনার পায়ের ধুলো মাথায় নিয়ে, ঘরে ফিরে যাব। ভগবান্ সুবুদ্ধি দিলেন, আমরা দুজনে তাই আদালত থেকে ফিরে এসে আপনার চরণেই শরণ নিলাম।” একটা ছোট নালা লইয়া উভয়ের বিবাদ। দলিলপত্র সামান্য যাহা কিছু ছিল, রমেশের হাতে দিয়া কা’ল সকালে আসিবে বলিয়া, উভয়ে লোকজন লইয়া প্রস্থান করিবার পর, রমেশ স্থির হইয়া বসিয়া রহিল। ইহা তাহার কল্পনার অতীত। সুদূর-ভবিষ্যতেও সে কখনও এত বড় আশা মনে ঠাঁই দেয় নাই। তাহার মীমাংসা ইহারা পরে গ্রহণ করুক বা না করুক, কিন্তু, আজ যে, ইহারা সরকারী আদালতের বাহিরে বিবাদনিষ্পত্তি করিবার অভিপ্রায়ে পথ হইতে ফিরিয়া তাহার কাছে উপস্থিত হইয়াছে, ইহাই তাহার বুক ভরিয়া আনন্দস্রোত ছুটাইয়া দিল। যদিচ, বেশী কিছু নয়, সামান্য দুইজন গ্রামবাসীর অতি তুচ্ছ বিবাদের কথা; কিন্তু, এই তুচ্ছ কথার সূত্র ধরিয়াই তাহার চিত্তের মাঝে অনন্ত সম্ভাবনার আকাশ-কুসুম ফুটিয়া উঠিতে লাগিল। তাহার এই দুর্ভাগিনী জন্মভূমির জন্য ভবিষ্যতে সে কি যে না করিতে পারিবে, তাহার কোথাও কোনো হিসাব-নিকাশ, কূলকিনারা আর রহিল না। বাহিরে বসন্ত-জ্যোৎস্নায় আকাশ ভাসিয়া যাইতেছিল, সেই দিকে চাহিয়া হঠাৎ তাহার রমাকে মনে