পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৮৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৮৪


একটা প্রদীপ জ্বলিতেছিল। তাহারি মৃদু আলোকে রমেশ অস্পষ্ট-আকারে রমার যতটুকু দেখিতে পাইল, তাহাতে তাহার শারীরিক অবস্থার কিছুই জানিতে পারিল না। এইমাত্র পথে আসিতে আসিতে সে যে সকল সঙ্কল্প মনে মনে ঠিক করিয়াছিল, রমার সম্মুখে বসিয়া তাহার আগাগোড়াই বেঠিক হইয়া গেল। একটুখানি চুপ করিয়া থাকিয়া, সে কোমলস্বরে জিজ্ঞাসা করিল,—“এখন কেমন আছ রাণি?” রমা তাহার পায়ের গোড়া হইতে একটুখানি সরিয়া বসিয়া কহিল,—“আমাকে আপনি রমা বলেই ডাক্‌বেন।” রমেশের পিঠে কে যেন চাবুকের ঘা মারিল। সে একমুহূর্ত্তেই কঠিন হইয়া কহিল,—“বেশ, তাই। শুনেছিলাম, তুমি অসুস্থ ছিলে—এখন কেমন আছ, তাই জিজ্ঞাসা কর্‌ছিলাম। নইলে, নাম তোমার যাই হৌক্‌, সে ধ’রে ডাক্‌বার আমার ইচ্ছেও নেই, আবশ্যকও হবে না।” রমা সমস্তই বুঝিল। একটুখানি স্থির থাকিয়া ধীরে ধীরে কহিল,—“এখন আমি ভাল আছি।” তার পরে কহিল,—“আমি ডেকে পাঠিয়েছি ব’লে আপনি হয় ত খুব আশ্চর্য্য হয়েচেন, কিন্তু—” রমেশ কথার মাঝ্‌খানেই তীব্র স্বরে বলিয়া উঠিল,—“না, হইনি। তোমার কোনো কাজে আশ্চর্য্য হবার দিন আমার কেটে গেছে। কিন্তু, ডেকে পাঠিয়েছ কেন?” কথাটা রমার বুকে যে কতবড় শেল-আঘাত করিল, তাহা রমেশ জানিতেও পারিল না। সে মৌন-নতমুখে কিছুক্ষণ বসিয়া থাকিয়া বলিল,—“রমেশ দা’, আজ