পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৮৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮৫
পল্লী-সমাজ


দু’টি কাজের জন্যে তোমাকে কষ্ট দিয়ে ডেকে এনেচি। আমি তোমার কাছে কত অপরাধ যে ক’রেচি, সে ত আমি জানি। কিন্তু, তবু আমি নিশ্চয় জান্‌তাম, তুমি আস্‌বে, আর আমার এই দু’টি শেষ অনুরোধও অস্বীকার কর্‌বে না।” অশ্রুভারে সহসা তাহার স্বরভঙ্গ হইয়া গেল। তাহা এতই স্পষ্ট যে, রমেশ টের পাইল, এবং চক্ষের নিমিষে তাহার পূর্ব্বস্নেহ আলোড়িত হইয়া উঠিল। এত আঘাত-প্রতিঘাতেও সে স্নেহ যে আজিও মরে নাই, শুধু নির্জ্জীব, অচৈতন্যের মত পড়িয়াছিল মাত্র, তাহা নিশ্চিত অনুভব করিয়া সে নিজেও আজ বিস্মিত হইয়া গেল। ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া শেষে কহিল,—“কি তোমার আনুরোধ?” রমা চকিতের মত মুখ তুলিয়াই আবার অবনত করিল। কহিল,—“যে বিষয়টা বড়দা’ তোমার সাহায্যে দখল করতে চাচ্চেন, সেটা আমার নিজের; অর্থাৎ আমার পোনর আনা, তোমাদের এক আনা, সেইটাই আমি তোমাকে দিয়ে যেতে চাই।” রমেশ পুনর্ব্বার উষ্ণ হইয়া উঠিল। কহিল,—“তোমার ভয় নেই, আমি চুরি কর্‌তে পূর্ব্বেও কখনো কাউকে সাহায্য করিনি, এখনো কর্‌ব না। আর যদি দান কর্‌তেই চাও—তার জন্যে অন্য লোক আছে—আমি দান-গ্রহণ করিনে।” পূর্ব্বে হইলে রমা তৎক্ষণাৎ বলিয়া উঠিত, “মুখুয্যেদের দান-গ্রহণ করায় ঘোষালদের অপমান হয় না।” আজ কিন্তু, এ কথা তাহার মুখ দিয়া বাহির হইল না। সে বিনীতভাবে কহিল,—“আমি জানি, রমেশ দা’, তুমি চুরি