ওপর আমার এই আদেশ রইল রমেশ, তাকে তুই যেন ভুল বুঝিস্নে। যাবার সময় আমি কারো বিরুদ্ধে কোন নালিশ ক’রে যেতে চাইনে, শুধু এই কথাটা আমার তুই ভুলেও কখনো অবিশ্বাস করিস্নে যে, তার বড় মঙ্গলাকাঙ্ক্ষিণী তোর আর কেউ নেই।” রমেশ বলিতে গেল,—“কিন্তু, জ্যাঠাইমা—” জ্যাঠাইমা তাড়াতাড়ি বাধা দিয়া বলিলেন,—“এর মধ্যে কোন ‘কিন্তু’ নেই রমেশ। তুই যা’ শুনেছিস্ সব মিথ্যে; যা’ জেনেছিস্, সব ভুল। কিন্তু, এ অভিযোগের এইখানেই যেন সমাপ্তি হয়। তোর কাজ যেন সমস্ত অন্যায়, সমস্ত হিংসা-বিদ্বেষকে সম্পূর্ণ তুচ্ছ ক’রে চিরদিন এম্নি প্রবল হ’য়ে ব’য়ে যেতে পারে, এই তোর ওপর তার শেষ অনুরোধ। এই জন্যই সে মুখ-বুজে সমস্ত সহ্য ক’রে গেছে। প্রাণ দিতে বসেচে, রে রমেশ, তবু কথা কয়নি।” গতরাত্রে রমার নিজের মুখের দুই একটা কথাও রমেশের সেই মুহূর্ত্তে মনে পড়িয়া দুর্জ্জয় রোদনের বেগ যেন ওষ্ঠ পর্য্যন্ত ঠেলিয়া উঠিল। সে তাড়াতাড়ি মুখ নীচু করিয়া প্রাণপণ-শক্তিতে বলিয়া ফেলিল,—“তাকে বোলো জ্যাঠাইমা, তাই হবে।” বলিয়াই হাত বাড়াইয়া কোন মতে তাঁহার পায়ের ধূলা লইয়া ছুটিয়া বাহির হইয়া গেল!
সম্পূর্ণ