পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
২০


সম্বন্ধে নহে; এখন এইটাই তাহার সর্ব্বাপেক্ষা অধিক বাজিল যে, ইহারা যাহাদিগকে ছোটলোক বলিয়া ডাকে, তাহাদেরই সহস্র চক্ষুর সম্মুখে এইমাত্র যে এত বড় একটা লজ্জাকর কাণ্ড করিয়া বসিল, সে জন্য ইহাদের কাহারও মনে এতটুকু ক্ষোভ বা লজ্জার কণামাত্রও নাই। ভৈরব মুখপানে চাহিয়া আছে দেখিয়া, রমেশ সংক্ষেপে কহিল, “আরও দু’শ কাপড় ঠিক ক’রে রাখুন।” “তা নইলে কি হয়? ভৈরব ভায়া, চল, আমিও যাই—তুমি একা আর কত পার্‌বে বল?” বলিয়া কাহারও সম্মতির অপেক্ষা না করিয়া গোবিন্দ উঠিয়া বস্ত্ররাশির নিকট গিয়া বসিল। রমেশ বাটীর ভিতর যাইবার উপক্রম করিতেই ধর্ম্মদাস তাহাকে একপাশে ডাকিয়া লইয়া চুপিচুপি অনেক কথা কহিল। রমেশ প্রত্যুত্তরে মাথা নাড়িয়া সম্মতি-জ্ঞাপন করিয়া ভিতরে চলিয়া গেল। কাপড় গুছাইতে গুছাইতে গোবিন্দ গাঙ্গুলী আড়চোখে সমস্ত দেখিল। “কৈ গো, বাবাজী কোথায় গো?” বলিয়া একটি শীর্ণকায় মুণ্ডিতশ্মশ্রূ প্রাচীন ব্রাহ্মণ প্রবেশ করিলেন। ইহার সঙ্গেও গুটিতিনেক ছেলে-মেয়ে। মেয়েটি সকলের বড়। তাহারই পরণে শুধু একখানি অতি জীর্ণ ডুরে-কাপড়। বালক দু’টি কোমরে এক-একগাছি ঘুন্‌সি ব্যতীত একেবারে দিগম্বর। উপস্থিত সকলেই মুখ তুলিয়া চাহিল। গোবিন্দ অভ্যর্থনা করিল—“এস দীনুদা, বোসো। বড় ভাগ্যি আমাদের যে, আজ তোমার পায়ের ধূলো পড়্‌ল। ছেলেটা একা সারা হয়ে যায়, তা’ তোমরা—” ধর্ম্মদাস গোবিন্দের