কোরো না বাবা! বিট্লে বামুন যতই ফোস্লাক্, ধর্ম্মদাস-গিন্নীর হাতে ভাঁড়ারের চাবিটাবি দিয়ো না বাবা, কিছুতে দিয়ো না—ঘি, ময়দা, তেল, নুন অর্দ্ধেক সরিয়ে ফেল্বে। তোমার ভাবনা কি বাবা? আমি গিয়ে তোমার মামীকে পাঠিয়ে দেব। সে এসে ভাঁড়ারের ভার নেবে, তোমার একগাছি কুটো পর্যন্ত লোকসান্ হবে না।” রমেশ ঘাড় নাড়িয়া “যে আজ্ঞে” বলিয়া মৌন হইয়া রহিল। তাহার বিস্ময়ের অবধি নাই। ধর্ম্মদাস যে তাঁহার গৃহিণীকে ভাঁড়ারের ভার লইবার জন্য পাঠাইয়া দিবার কথা এত গোপনে কহিয়াছিল, গোবিন্দ ঠিক তাহাই আন্দাজ করিল কিরূপে?
উলঙ্গ শিশু-দুটো ছুটিয়া আসিয়া দীনু-দার কাঁধের উপর ঝুলিয়া পড়িল, “বাবা, সন্দেশ খাব।” দীনু একবার রমেশের প্রতি, একবার গোবিন্দের প্রতি চাহিয়া কহিল, “সন্দেশ কোথায় পাব রে?” “কেন, ঐ যে হচ্চে” বলিয়া তাহারা ওদিকের ময়রাদের দেখাইয়া দিল।
“আঁমরাও দাঁদামশাই”—বলিয়া নাকে কাঁদিতে কাঁদিতে আরও তিন-চারিটি ছেলে—মেয়ে ছুটিয়া আসিয়া বৃদ্ধ ধর্ম্মদাসকে ঘিরিয়া ধরিল। “বেশ ত, বেশ ত” বলিয়া রমেশ ব্যস্ত হইয়া অগ্রসর হইয়া আসিল, “ও আচায্যি মশাই, বিকেলবেলায় ছেলেরা সব বাড়ি থেকে বেরিয়েছে, খেয়ে ত আসেনি; ওহে ও কি নাম তোমার? নিয়ে এস ত ঐ থালাটা এদিকে।” ময়রা সন্দেশের থালা লইয়া আসিবামাত্র ছেলেরা উপুড় হইয়া