পড়িল; বাঁটিয়া দিবার অবকাশ দেয় না, এমনি ব্যস্ত করিয়া তুলিল। ছেলেদের খাওয়া দেখিতে দেখিতে দীননাথের শুষ্কদৃষ্টি সজল ও তীব্র হইয়া উঠিল—“ওরে ও খেঁদি, খাচ্চিস ত, সন্দেশ হয়েচে কেমন বল্ দেখি?” “বেশ বাবা।” বলিয়া খেঁদি চিবাইতে লাগিল। দীনু মৃদু হাসিয়া ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন, “হাঃ তোদের আবার পছন্দ! মিষ্টি হলেই হ’ল। হাঁ হে কারিকর, এ কড়াটা কেমন নামালে? কি বল, গোবিন্দ ভায়া, এখনো একটু রোদ আছে ব’লে মনে হচ্চে না?
ময়রা কোন দিকে না চাহিয়াই তৎক্ষণাৎ কহিল, “আজ্ঞে আছে বৈ কি! এখনো ঢের বেলা আছে, এখনো সন্ধ্যে আহ্নিকের—”
“তবে কৈ, দাও দেখি একটা গোবিন্দ ভায়াকে চেখে দেখুক, কেমন কল্কাতার কারিকর তোমরা! না, না, আমাকে আবার কেন? তবে আধখানা—আধখানার বেশী নয়। ওরে ও ষষ্ঠীচরণ, একটু জল আন্ দিকি বাবা, হাতটা ধুয়ে ফেলি—” রমেশ ডাকিয়া বলিয়া দিল, “অমনি বাড়ীর ভিতর থেকে গোটা-চারেক থালাও নিয়ে আসিস্ ষষ্ঠীচরণ।” প্রভুর আদেশমত ভিতর হইতে গোটাতিনেক রেকাবি ও জলের গেলাস আসিল এবং দেখিতে দেখিতে এই বৃহৎ থালার অর্দ্ধেক মিষ্টান্ন এই তিনটি প্রাচীন ম্যালেরিয়াক্লিষ্ট, কৃশ, সদ্ব্রাহ্মণের জলযোগে নিঃশেষিত হইয়া গেল। “হাঁ, কল্কাতার কারিকর বটে! কি বল ধর্ম্মদাসদা?” বলিয়া দীননাথ