পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৩২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৩০


ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেলেন। বেণীর সহিত রমেশের ইতিমধ্যে দেখা হইয়া যে একটা কিছু হইয়া গিয়াছে, তাহা তিনি বুঝিলেন। তিনি যে পথে চলিয়া গেলেন, সেই দিকে চাহিয়া কিছুক্ষণ নিঃশব্দে দাঁড়াইয়া থাকিয়া, রমেশ ম্লানমুখে যখন বাহিরে আসিল, তখন গোবিন্দ ব্যগ্র হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “বাবাজী, বড়গিন্নী এসেছিলেন না?” রমেশ ঘাড় নাড়িয়া বলিল, “হাঁ।” “শুন্‌লুম, ভাঁড়ার বন্ধ ক’রে চাবি নিয়ে গেলেন না।” রমেশ তেমনি মাথা নাড়িয়া জবাব দিল। কারণ, অবশেষে কি মনে করিয়া তিনি যাইবার সময় ভাঁড়ারের চাবি নিজেই লইয়া গিয়াছিলেন। “দেখলে ধর্ম্মদাস-দা, যা বলেচি তাই। বলি, মৎলবটা বুঝ্‌লে বাবাজী?” রমেশ মনে মনে অত্যন্ত ক্রূদ্ধ হইল। কিন্তু নিজের নিরুপায় অবস্থা স্মরণ করিয়া সহ্য করিয়া চুপ করিয়া রহিল। দরিদ্র দীনু ভট্‌চায তখনও যায় নাই। কারণ তাহার বুদ্ধি-শুদ্ধি ছিল না। সে ছেলে-মেয়ে লইয়া যাহার দয়ায় পেট ভরিয়া সন্দেশ খাইতে পাইয়াছিল, তাহাকে আন্তরিক দুটো আশীর্ব্বাদ না করিয়া, সকলের সম্মুখে উচ্চকণ্ঠে তাহার সাতপুরুষের স্তব-স্তুতি না করিয়া আর ঘরে ফিরিতে পারিতেছিল না। সে ব্রাহ্মণ নিরীহভাবে বলিয়া ফেলিল, “এ মৎলব বোঝা আর শক্ত কি ভায়া? তালাবন্ধ ক’রে চাবি নিয়ে গেচেন, তার মানে ভাঁড়ার আর কারো হাতে না পড়ে। তিনি সমস্তই ত জানেন।” গোবিন্দ বিরক্ত হইয়াছিল; নির্ব্বোধের কথায় জ্বলিয়া