জ্যাঠাইমার সস্নেহ অনুরোধে এবং তাঁহার ব্যথিত মুখ মনে করিয়া রমেশ ভিতরে ভিতরে পীড়া অনুভব করিতেছিল। সকলে প্রস্থান করিলে সে বড়দা’র কাছে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইল। বেণীর চণ্ডীমণ্ডপের বাহিরে আসিয়া যখন উপস্থিত হইল, তখন রাত্রি আটটা। ভিতরে যেন একটা লড়াই চলিতেছে। গোবিন্দ গাঙ্গুলীর হাঁকা-হাঁকিটাই সবচেয়ে বেশী। বাহির হইতেই তাহার কানে গেল, গোবিন্দ বাজি রাখিয়া বলিতেছে, “এ যদি না দু’দিনে উচ্ছন্ন যায়, ত আমার গোবিন্দ গাঙ্গুলী নাম তোমরা বদ্লে রেখো, বেণী বাবু! নবাবি কাণ্ডকারখানা শুন্লে ত? তারিণী ঘোষাল সিকি পয়সা রেখে মরেনি, তা’ জানি, তবে এত কেন? হাতে থাকে কর, না থাকে, বিষয় বন্ধক দিয়ে কে কবে ঘটা ক’রে বাপের ছাদ্দ করে, তা ত কখন শুনিনি, বাবা! আমি তোমাকে নিশ্চয় বল্চি, বেণীমাধব বাবু, এ ছোঁড়া নন্দীদের গদি থেকে অন্ততঃ তিনঢি হাজার টাকা দেনা ক’রেচে।” বেণী উৎসাহিত হইয়া কহিল, “তা হ’লে কথাটা ত বার ক’রে নিতে হচ্চে, গোবিন্দ খুড়ো?” গোবিন্দ স্বর মৃদু করিয়া বলিল, “সবুর কর না, বাবাজী! একবার ভাল করে ঢু্ক্তেই দাও না—তার পরে—বাইরে দাঁড়িয়ে কে ও? এ কি, রমেশ বাবাজী? আমরা থাক্তে এত রাত্তিরে তুমি কেন, বাবা?” রমেশ সে কথার জবাব না দিয়া অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “বড়দা’, আপনার কাছেই এলুম।” বেণী থতমত খাইয়া জবাব দিতে পারিল না। গোবিন্দ তৎক্ষণাৎ