পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৩৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৫
পল্লী-সমাজ


কহিল, “আস্‌বে বৈ কি, বাবা, একশবার আস্‌বে! এ ত তোমারই বাড়ী। আর বড়ভাই পিতৃতুল্য। তাই ত আমরা বেণীবাবুকে বল্‌তে এসেছি, বেণীবাবু, তারিণীদার ওপর মনোমালিন্য তাঁর সঙ্গেই যাক্‌—আর কেন? তোমরা দু’ভাই এক হও, আমরা দেখে চোখ জুড়োই—কি বল, হালদারমামা? ও কি, দাঁড়িয়ে রইলে যে, বাবা—কে আছিস্‌ রে, একখানা কম্বলের আসন-টাসন পেতে দে না রে! না, বেণী বাবু, তুমি বড় ভাই—তুমিই সব। তুমি আলাদা হয়ে থাক্‌লে চলবে না। তা’ ছাড়া বড়গিন্নী ঠাক্‌রুন যখন স্বয়ং গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন, তখন—” বেণী চম্‌কাইয়া উঠিল—“মা গিয়ে ছিলেন?”

 এই চমক্‌টা লক্ষ্য করিয়া গোবিন্দ মনে মনে খুসি হইল। কিন্তু, বাহিরে সে ভাব গোপন করিয়া নিতান্ত ভাল মানুষের মত খবরটা ফলাও করিয়া বলিতে লাগিল, “শুধু যাওয়া কেন, ভাঁড়ার-টাঁড়ার—করাকর্ম্ম যা’ কিছু তিনিই ত কর্‌চেন। আর তিনি না কর্‌লে কর্‌বেই বা কে?” সকলেই চুপ করিয়া রহিল। গোবিন্দ একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “নাঃ—গাঁয়ের মধ্যে বড়গিন্নী ঠাক্‌রুনের মত মানুষ কি আর আছে?—না হবে? না বেণীবাবু, সাম্‌নে বল্‌লে খোসামোদ করা হবে, কিন্তু, যে যাই বলুক, গাঁয়ে যদি লক্ষ্মী থাকেন, ত সে তোমার মা। এমন মা কি কারু হয়?” বলিয়া পুনশ্চ একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করিয়া গম্ভীর হইয়া রহিলেন। বেণী অনেকক্ষণ