চুপ করিয়া থাকিয়া অস্ফুটে কহিল,—“আচ্ছা—” গোবিন্দ চাপিয়া ধরিল, “শুধু আচ্ছা নয়, বেণীবাবু! যেতে হবে, কর্তে হবে, সমস্ত ভার তোমার উপরে। ভাল কথা, সবাই আপনারা ত উপস্থিত আছেন, নেমন্তন্নটা কি রকম করা হবে, একটা ফর্দ্দ ক’রে ফেলা হোক্ না কেন? কি বল, রমেশ বাবাজী? ঠিক্ কথা কি না, হালদার মামা! ধর্ম্মদাস-দা’ চুপ ক’রে রইলে কেন? কাকে বল্তে হবে, কাকে বাদ দিতে হবে, জান ত সব।”
রমেশ উঠিয়া দাঁড়াইয়া সহজ-বিনীত-কণ্ঠে বলিল, “বড়দা,’ একবার পায়ের ধুলো যদি দিতে পারেন—” বেণী গম্ভীর হইয়া কহিল, “মা যখন গেছেন, তখন আমার যাওয়া না যাওয়া—কি বল, গোবিন্দ খুড়ো?” গোবিন্দ কথা কহিবার পূর্ব্বেই রমেশ বলিল, “আপনাকে আমি পীড়াপীড়ি কর্তে চাইনে, বড়দা’, যদি অসুবিধে না হয়, একবার দেখে শুনে আস্বেন।”
বেণী চুপ করিয়া রহিল। গোবিন্দ কি একটা বলিবার চেষ্টা করিতেই রমেশ উঠিয়া চলিয়া গেল। তখন গোবিন্দ বাহিরের দিকে গলা বাড়াইয়া দেখিয়া ফিস্-ফিস্ করিয়া বলিল, “দেখ্লে, বেণীবাবু, কথার ভাবখানা!” বেণী অন্যমনস্ক হইয়া কি ভাবিতেছিল, কথা কহিল না।
পথে চলিতে চলিতে গোবিন্দের কথাগুলা মনে করিয়া রমেশের সমস্ত মন ঘৃণায় পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। সে অর্দ্ধেক