বাহিরে এইমাত্র শ্রাদ্ধ শেষ হইয়া গেছে। আসন হইতে উঠিয়া রমেশ অভ্যাগতদিগের সহিত পরিচিত হইবার চেষ্টা করিতেছে—বাড়ীর ভিতরে আহারের জন্য পাতা পাড়িবার আয়োজন হইতেছে, এমন সময় একটা গোলমাল হাঁকাহাঁকি শুনিয়া রমেশ ব্যস্ত হইয়া, ভিতরে আসিয়া উপস্থিত হইল। সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই আসিল। ভিতরে রন্ধনশালার কপাটের একপাশে একটি ২৫।২৬ বছরের বিধবা মেয়ে জড়সড় হইয়া, পিছন ফিরিয়া দাঁড়াইয়া আছে এবং আর একটি প্রৌঢ়া রমণী তাহাকে আগলাইয়া দাঁড়াইয়া ক্রোধে চোখমুখ রক্তবর্ণ করিয়া চীৎকারে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বাহির করিতেছে। বিবাদ বাধিয়াছে পরাণ হালদারের সহিত। রমেশকে দেখিবামাত্র প্রৌঢ়া চেঁচাইয়া প্রশ্ন করিল, “হাঁ বাবা, তুমিও ত গাঁয়ের একজন জমিদার, বলি, যত দোষ কি এই ক্ষেন্তি বাম্নির মেয়ের? মাথার ওপর আমাদের কেউ নেই ব’লে কি যতবার খুসি শাস্তি দেবে?” গোবিন্দকে দেখাইয়া কহিল, “ঐ উনি মুখুয্যে বাড়ীর গাছ-পিতিষ্ঠের সময় জরিমানা ব’লে ইস্কুলের নামে দশটাকা আমার কাছে আদায় করেননি কি? গাঁয়ের ষোলো–আনা শেতলা-পুজোর জন্যে দুজোড়া পাঁঠার দাম ধ’রে নেননি কি? তবে, কতবার ঐ এক কথা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি কর্তে চান, শুনি?” রমেশ ব্যাপারটা কি, কিছুই বুঝিতে