উপযাচক হইয়া ঘর বহিয়া ঋণশোধ করিতে আসে, তাহা মধু পাল এতটা বয়সে কখন চোখে ত দেখেই নাই, কানেও শোনে নাই। কথায় কথায় অনেক কথা হইল। মধু কহিল, “দোকান কেমন ক’রে চল্বে, বাবু? দু’ আনা চার আনা একটাকা পাঁচসিকে ক’রে প্রায় পঞ্চাশ ষাট টাকা বাকী পড়ে গেছে। এই দিয়ে যাচ্চি ব’লে দু মাসেও আদায় হবার যো’ নেই। এ কি-বাঁডুয্যে মশাই যে! কবে এলেন? প্রাতঃ পেন্নাম হই।”
বাঁডুয্যে মশায়ের বা হাতে একটা গাড়ু, পায়ের নখে, গোড়ালিতে কাদার দাগ, কানে পৈতা জড়ানো, ডানহাতে কচুপাতায় মোড়া চারিটি কুচোচিংড়ি। তিনি ফোঁস করিয়া একটা নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “কাল রাত্তিরে এলুম; তামাক থা’ দিকি মধু!” বলিয়া গাড়ু রাখিয়া হাতের চিংড়ি মেলিয়া ধরিয়া বলিলেন, “সৈরুবি জেলেনীর আক্কেল দেখলি, মধু—খপ্ ক’রে হাতটা আমার ধ’রে ফেল্লে? কালেকালে কি হ’ল বল্ দেখি রে, এই কি এক পয়সার চিংড়ি? বামুনকে ঠকিয়ে ক’কাল খাবি মাগী, উচ্ছন্ন যেতে হবে না?” মধু বিস্ময় প্রকাশ করিয়া কহিল’ “হাত ধরে ফেল্লে আপনার?” ক্রুদ্ধ বাঁডুয্যে মশাই একবার চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিয়া উত্তেজিত হইয়া কহিলেন—“আড়াইটি পয়সা শুধু বাকী, তাই ব’লে খামকা হাটশুদ্ধ লোকের সাম্নে হাত ধর্বে আমার? কে না দেখ্লে বল্। মাঠ থেকে ব’সে এসে, গাড়ুটি মেজে নদীতে