যে সমস্ত সাহায্য বন্ধ করিয়া দিয়াছেন, তাহার কারণ কেহই বলিতে পারে না।” রমেশ কৌতূহলী হইয়া রমার সম্বন্ধে আরও কয়েকটি প্রশ্ন করিয়া, শেষে জিজ্ঞাসা করিল, “তাঁর একটি ভাই এ ইস্কুলে পড়ে না?” মাষ্টার কহিল, “যতীন ত? পড়ে বৈকি।” রমেশ বলিল, “আপনার ইস্কুলের বেলা হয়ে যাচ্ছে, আজ আপনি যান, কা’ল আমি আপনাদের ওখানে যাব।” “যে আজ্ঞে” বলিয়া হেডমাষ্টার আর একবার রমেশকে প্রণাম করিয়া, জোর করিয়া তাহার পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া, বিদায় হইল।
বিশ্বেশ্বরীর সেদিনের কথাটা সেইদিনেই দশখানা গ্রামে পরিব্যাপ্ত হইয়া গিয়াছিল। বেণী লোকটা নিজে কাহারও মুখের উপর রূঢ় কথা বলিতে পারিত না; তাই সে গিয়া রমার মাসীকে ডাকিয়া আনিয়াছিল। সেকালে নাকি তক্ষক দাঁত ফুটাইয়া এক বিরাট অশ্বত্থ গাছ জ্বালাইয়া ছাই করিয়া দিয়াছিল। এই মাসীটিও সেদিন সকালবেলায় ঘরে চড়িয়া যে বিষ উদ্গীর্ণ করিয়া গেলেন, তাহাতে বিশ্বেশ্বরীর রক্তমাংসের দেহটা, কাঠের নয় বলিয়াই হৌক, কিংবা একাল সেকাল নয় বলিয়াই হৌক, জ্বলিয়া ভস্মস্তূপে পরিণত হইয়া গেল না। সমস্ত অপমান