পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৬৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৩
পল্লী-সমাজ


শোন কথা! বললুম, ‘থাকবে না কেন! কিন্তু ন্যায্য-অংশ ছেড়ে দেবই বা কেন, আর কে কোথায় এমন দেয়?’ রমেশ বাবু বইখানা আবার মেলে ধ’রে মিনিট পাঁচেক চুপ ক’রে থেকে বললেন, “সে ঠিক। কিন্তু দুখানা তুচ্ছ কাঠের জন্য ত আর ঝগড়া করা যায় না!” ভৈরব অতিশয় বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিল—“বলেন কি!”

 গোপাল সরকার মৃদু হাসিয়া বারদুই মাথা নাড়িয়া কহিল, “বলি ভাল, আচায্যিমশাই, বলি ভাল! আমি সেই দিন থেকে বুঝেচি আর মিছে কেন! ছোট তরফের মা-লক্ষ্মী তারিণী ঘোষালের সঙ্গেই অন্তর্ধান হয়েচেন!” ভৈরব খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, “কিন্তু পুকুরটা যে আমার বাড়ীর পিছনেই—আমায় একবার জানান চাই।”—গোপাল কহিল, “বেশ ত ঠাকুর, একবার জানিয়েই এসো না। দিবারাত্রি বই নিয়ে থাক্‌লে, আর সরিকদের এত ভয় কর্‌লে, কি বিষয়-সম্পত্তি রক্ষে হয়? যদু মুখুয্যের কন্যা—স্ত্রীলোক, সে পর্য্যন্ত শুনে হেসে কুটিপাটি! গোবিন্দ গাঙুলীকে ডেকে নাকি সেদিন তামাশা ক’রে বলেছিল, ‘রমেশবাবুকে বোলো একটা মাসহারা নিয়ে বিষয়টা আমার হাতে দিতে।’ এর চেয়ে লজ্জা আর আছে?” বলিয়া গোপাল রাগে-দুঃখে মুখখানা বিকৃত করিয়া নিজের কাজে মন দিল।

 বাটীতে স্ত্রীলোক নাই। সর্ব্বত্রই অবারিতদ্বার। ভৈরব ভিতরে আসিয়া দেখিল, রমেশ সামনের বারান্দায় একখানা