তাহাকে জড়াইয়া ধরিল। “খপর্দার, যতীন—কখ্খনো এমন কাজ করিস্নে, ভাই, কখ্খনো না।” বলিয়া ভাইটিকে সে যেন প্রাণপণ বলে বুকের উপর চাপিয়া ধরিয়া রাখিল। তাহার অতি দ্রুত হৃৎস্পন্দন স্পষ্ট অনুভব করিয়া যতীন, বালক হইলেও, এবার বড় বিস্ময়ে দিদির মুখপানে চাহিয়া চুপ করিয়া রহিল। একে ত, এমনধারা করিতে কখনও সে পূর্ব্বে দেখে নাই, তা’ ছাড়া ছোট বাবুকে ছোটদাদা বলিয়া জানিয়া যখন তাহার নিজের মনের গতি সম্পূর্ণ অন্য পথে গিয়াছে, তখন দিদি কেন যে তাঁহাকে এত ভয় করিতেছে, তাহা সে কোনমতেই ভাবিয়া পাইল না। এমন সময়ে মাসীর তীক্ষ্ণ আহ্বান কানে আসিতেই রমা, যতীনকে ছাড়িয়া দিয়া তাড়াতাড়ি উঠিয়া দাঁড়াইল। অনতিকাল পরে’ তিনি স্বয়ং আসিয়া দ্বারের সম্মুখে দাঁড়াইয়া বলিলেন, “আমি বলি, বুঝি রমা ঘাটে চান কর্তে গেছে! বলি, একাদশী ব’লে কি এতটা বেলা পর্য্যন্ত মাথায় একটু তেলজলও দিতে হবে না? মুখ শুকিয়ে যে একেবারে কালীবর্ণ হয়ে গেছে।” রমা, জোর করিয়া একটুখানি হাসিয়া বলিল, “তুমি যাও মাসী, আমি এখনি যাচ্ছি।” “যাবি আর কখন্?” বেরিয়ে দেখ্গে যা, বেণীরা মাছ ভাগ কর্তে এসেচে।” মাছের নামে যতীন ছুটিয়া চলিয়া গেল। মাসীর অলক্ষ্যে রমা আঁচল দিয়া মুখখানা একবার জোর করিয়া মুছিয়া লইয়া, তাঁহার পিছনে পিছনে বাহিরে আসিয়া উপস্থিত