পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৭৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৭২


গমনের উদ্যোগ করিলেন; এবং মুখুয্যেদের প্রয়োজন অল্প বলিয়া রমার অংশ হইতে উপস্থিত সকলেই যোগ্যতা-অনুসারে কিছু-কিছু সংগ্রহ করিয়া ঘরে ফিরিবার উপক্রম করিতেছে, এমন সময় সকলেই আশ্চর্য্য হইয়া চাহিয়া দেখিল, রমেশ ঘোষালের সেই বেঁটে হিন্দুস্থানী চাকরটা তাহার মাথার সমান উঁচু বাঁশের লাঠি হাতে একেবারে উঠানের মাঝখানে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। এই লোকটার চেহারা এম্‌নি দুষমনের মত যে, সকলের আগে সে চোখে পড়েই এবং একবার পড়িলেই মনে থাকে। গ্রামের ছেলে বুড়া সবাই তাহাকে চিনিয়া লইয়াছিল; এমন কি, তাহার সম্বন্ধে নানাবিধ আজগুবি গল্পও ধীরে ধীরে প্রচারিত এবং প্রতিষ্ঠিত হইতে আরম্ভ করিয়াছিল। লোকটা এত লোকের মাঝ্‌খানে রমাকেই যে কি করিয়া কর্ত্রী বলিয়া চিনিল, তাহা সেই জানে, দূর হইতে মস্ত একটা সেলাম করিয়া, ‘মা-জী’ বলিয়া সম্বোধন করিল, এবং কাছে আসিয়া দাঁড়াইল। তাহার চেহারা যেমন হৌক, কণ্ঠস্বর সত্যই ভয়ানক;—অত্যন্ত মোটা এবং ভাঙা। আর একটা সেলাম করিয়া হিন্দি-বাঙ্গালা মেশানো ভাষায় সংক্ষেপে জানাইল, সে রমেশ বাবুর ভৃত্য এবং মাছের তিন ভাগের এক ভাগ গ্রহণ করিতে আসিয়াছে। রমা বিস্ময়ের প্রভাবেই হৌক বা তাহার সঙ্গত প্রার্থনার বিরুদ্ধে কথা খুঁজিয়া না পাওয়ার জন্যই হৌক—সহসা উত্তর দিতে পারিল না। লোকটা চকিতে ঘাড় ফিরাইয়া বেণীর ভৃত্যকে উদ্দেশ করিয়া গম্ভীর গলায় বলিল, “এই যাও মাৎ”। চাকরটা