জায়গা আটদশ বৎসর পূর্ব্বে বৃষ্টির জলস্রোতে ভাঙ্গিয়া গিয়াছিল। সেই অবধি ভাঙনটা ক্রমাগত দীর্ঘতর এবং গভীরতর হইয়া উঠিয়াছে। প্রায়ই জল জমিয়া থাকে—স্থানটা উত্তীর্ণ হইতে সকলকেই একটু দুর্ভাবনায় পড়িতে হয়। অন্য সময়ে কোনমতে পা টিপিয়া, কাপড় তুলিয়া, অতি সন্তর্পণে ইহারা পার হয়, কিন্তু বর্ষাকালে আর কষ্টের অবধি থাকে না। কোন বছর বা দুটো বাঁশ ফেলিয়া দিয়া, কোন বছর বা একটা ভাঙা তালের ডোঙা উপুড় করিয়া দিয়া, কোনমতে তাহারি সাহায্যে ইহারা আছাড় খাইয়া, হাত-পা ভাঙ্গিয়া, ওপারে গিয়া হাজির হয়। কিন্তু এত দুঃখসত্ত্বেও গ্রামবাসীরা আজ পর্য্যন্ত তাহার সংস্কারের চেষ্টামাত্র করে নাই। মেরামত করিতে টাকাকুড়ি ব্যয় হওয়া সম্ভব। এই টাকাটা রমেশ, নিজে না দিয়া চাঁদা তুলিবার চেষ্টায় আটদশদিন পরিশ্রম করিয়াছে; কিন্তু আট-দশটা পয়সা কাহারো কাছে বাহির করিতে পারে নাই। শুধু তাই নয়—আজ সকালে ঘুরিয়া আসিবার সময়, পথের ধারে শ্যাকরাদের দোকানের ভিতরে এই প্রসঙ্গ হঠাৎ কাণে যাওয়ায়, সে বাহিরে দাঁড়াইয়া শুনিতে পাইল, কে একজন আর একজনকে হাসিয়া বলিতেছে, “একটা পয়সা কেউ তোরা দিস্নে। দেখচিস্নে ওর নিজের গরজটাই বেশী? জুতো পায়ে মস্মসিয়ে চলা চাই কিনা! না দিলে, ও আপনি সারিয়ে দেবে তা’ দেখিস! তা ছাড়া এতকাল যে ও ছিল না, আমাদের ইষ্টীশান যাওয়া কি আট্কে ছিল? কে আর