প্রাণে বেঁচেচ; আজ আবার উনি গিয়ে যদি তাঁকে পাঠিয়ে দেন—একেবারে তোমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে তবে তিনি বাড়ী ফির্বেন।” বলিয়াই কোনরূপ বাদ-প্রতিবাদের অপেক্ষামাত্র না করিয়াই দ্রুতপদে বাহির হইয়া গেল।
বিশ্বেশ্বরী চেঁচাইয়া ডাকিলেন, “যাসনে, রমেশ, কথা শুনে যা।” রমেশ দ্বারের বাহির হইতে বলিল, “না, জ্যাঠাইমা—যারা অহঙ্কারের স্পর্দ্ধায় তোমাকে পর্য্যন্ত পায়ের তলায় মাড়িয়ে চলে, তাদের হয়ে একটি কথাও তুমি বোলো না—” বলিয়া তাহার দ্বিতীয় অনুরোধের পূর্ব্বেই চলিয়া গেল। বিহ্বলের মত রমা কয়েক মুহূর্ত্ত বিশ্বেশ্বরীর মুখের পানে চাহিয়া থাকিয়া কাঁদিয়া ফেলিল—“এ কলঙ্ক আমার কেন, জ্যাঠাইমা? আমি কি মাসীকে শিখিয়ে দিই, না, তার জন্য আমি দায়ী?” জ্যাঠাইমা তাহার হাতখানা নিজের হাতের মধ্যে টানিয়া লইয়া সস্নেহে বলিলেন, “শিখিয়ে যে দাও না, এ কথা সত্যি। কিন্তু তাঁর জন্যে দায়ী তোমাকে কতকটা হ’তে হয় বই কি মা!” রমা অন্য হাতে চোখ মুছিতে মুছিতে রুদ্ধ অভিমানে সতেজ অস্বীকার করিয়া বলিল, “কেন দায়ী? কখ্খনো না। আমি যে এর বিন্দুবিসর্গও জান্তাম না, জ্যাঠাইমা! তবে কেন আমাকে উনি, মিথ্যে দোষ দিয়ে, অপমান ক’রে গেলেন?” বিশ্বেশ্বরী ইহা লইয়া আর তর্ক করিলেন না। ধীরভাবে বলিলেন, “সকলে ত ভেতরের কথা জান্তে পারে না, মা। কিন্তু তোমাকে অপমান কর্বার ইচ্ছে ওর কখনো নেই, এ কথা