পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৮৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৮৫
পল্লী-সমাজ


কাঁদিয়া উঠিল। গোপাল সরকার চণ্ডীমণ্ডপের বারান্দায় বসিয়া লিখিতেছিল; উঠিয়া আসিয়া কহিল,—“ছেলেটি দক্ষিণপাড়ার দ্বারিক ঠাকুরের ছেলে। আপনার কাছে কিছু ভিক্ষার জন্য এসেচে।” ভিক্ষার নাম শুনিয়াই রমেশ জ্বলিয়া উঠিয়া বলিল, “আমি কি শুধু ভিক্ষা দিতেই বাড়ী এসেচি, সরকার মশায়? গ্রামে কি আর লোক নেই?” গোপাল সরকার একটু অপ্রতিভ হইয়া বলিল, “সে ত ঠিক কথা বাবু! কিন্তু কর্ত্তা ত কখনও কারুকে ফেরাতেন না; তাই, দায়ে পড়লেই, এই বাড়ীর দিকেই লোকে ছুটে আসে।” ছেলেটির পানে চাহিয়া প্রৌঢ়াটিকেই উদ্দেশ করিয়া বলিল,—“হাঁ কামিনীর মা, এদের দোষও ত কম নয়, বাছা! জ্যান্ত থাক্‌তে প্রায়শ্চিত্ত ক’রে দিলে না, এখন মড়া যখন ওঠে না, তখন টাকার জন্য ছুটে বেড়াচ্চে! ঘরে ঘটিটা বাটিটাও কি নেই বাপু?” কামিনীর মা জাতিতে সদ্‌গোপ। এই ছেলেটির প্রতিবেশী। মাথা নাড়িয়া বলিল,—“বিশ্বেস না হয়, বাপু, গিয়ে দেখ্‌বে চল। আমার কিছু থাক্‌লেও কি মরা বাপ ফেলে একে ভিক্ষে কর্‌তে আনি? চোখে না দেখ্‌লেও শুনেচ ত সব? এই ছমাস ধ’রে আমার যথাসর্ব্বস্ব এই জন্যই ঢেলে দিয়েচি। বলি, ঘরের পাশে বামুনের ছেলেমেয়ে না খেতে পেয়ে মর্‌বে!” রমেশ এই ব্যাপারটা কতক যেন অনুমান করিতে পারিল। গোপাল সরকার তখন বুঝাইয়া কহিল,—“এই ছেলেটির বাপ—দ্বারিক চক্রবর্ত্তী, ছয়মাস হইতে কাসরোগে শয্যাগত থাকিয়া,